কুর্মিটোলায় ফিউনারেল প্যারেডে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের শেষ বিদায়

আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যার কাঁধে সন্তানের লাশ, জানাজায় বাবা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২৩ জুলাই, ২০২৫ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে শেষ বিদায় জানানো হয়েছে তার ফিউনারেল প্যারেডে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় রাজধানীর কুর্মিটোলা বিএফ বাশার ঘাঁটিতে ফিউনারেল প্যারেডের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকারউজজামান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ও ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধানসহ নিহতের পরিবার সদস্যারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার জানাজার পরে তৌকিরের মরদেহ বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে দাফনের জন্য রাজশাহীতে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।

আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যার কাঁধে সন্তানের লাশ : নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরকে রাজশাহীতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। গতকাল বিকালে নগরীর সপুরা গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। দাফনে অংশ নেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিক, আত্মীয়স্বজন ও সর্বস্তরের মানুষ।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, সাবেক সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ সেনা ও বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ হাজারো মানুষ।

জানাজার আগে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করা হয়। সেখানে বক্তব্য দেন তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম ও মামা মতিউর রহমান। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তহুরুল ইসলাম বলেন, আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যে সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়েছি। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। যারা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সবার জন্য দোয়া চাই।

দুপুর ৩টায় বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তৌকিরের মরদেহ ঢাকা থেকে রাজশাহী সেনানিবাসে আনা হয়। সেখান থেকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় নগরীর উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরে তাদের ভাড়া বাসায়। তৌকিরের মরদেহ পৌঁছালে স্বজন ও এলাকাবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। কিছু সময় বাসার সামনে রাখা হয় ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স। এরপর মরদেহ জানাজার জন্য নেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে।

তৌকির ইসলামের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে হলেও দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ রাজশাহীতেই বসবাস করতেন। রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। বছরখানেক আগে তার বিয়ে হয়। তার স্ত্রী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক।

গত সোমবার প্রশিক্ষণের শেষ ধাপে সলো ফ্লাইট পরিচালনার সময় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বিধ্বস্ত হয় তার যুদ্ধবিমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেরিটাইম ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণের মান বিশ্ব স্বীকৃত
পরবর্তী নিবন্ধমা, হাসপাতাল এত দূরে কেন