দুই ভাইয়ের এক বউ!

পুরোনো প্রথার বিয়ে নিয়ে চাঞ্চল্য

| সোমবার , ২১ জুলাই, ২০২৫ at ১২:০২ অপরাহ্ণ

ভারতের হিমাচল প্রদেশের একটি বিয়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনাসমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে। এক তরুণীকে বিয়ে করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন দুই ভাই। যদিও বরকনের দাবি, এটি তাদের সমপ্রদায়ের পুরোনো একটি প্রথা। আর সেই প্রথা মেনেই বিয়ে করছেন বলে দাবি দুই যুবকের।

ঘটনা হিমাচলের সিরমৌর জেলার শিলাই গ্রামের। গত ১২ জুলাই কয়েকশো গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই ওই তিনজনের বিয়ে হয়। যদিও ভারতে বহুবিবাহের বিষয়টি আইনত স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। তাই হিমাচলের এই বিয়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।

জানা গেছে, দুই ভাইয়ের একজন হলেন প্রদীপ নেগি, অন্যজন কপিল নেগি এবং কনে সুনীতা চৌহান। প্রদীপ সরকারি চাকরি করেন। আর কপিল বিদেশে কর্মরত। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই তাদের বিয়ে হয় কুনহাট গ্রামের তরুণী সুনীতার সঙ্গে। বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল ট্রান্সগিরি এলাকায়। সেখানে কয়েকশো গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সুনীতার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন প্রদীপ ও কপিল। তিনদিন ধরে চলে এই বিয়ের অনুষ্ঠান। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও গ্রামের বাসিন্দারা এই বিয়েতে নিমন্ত্রিত ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠান ঐতিহ্যবাহী ট্রান্সগিরি খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। পাহাড়ি গানে মেতেছিল গোটা বিয়েবাড়ি। ঐতিহ্যবাহী রীতিগুলিও ছিল নজরকাড়া। দিনভর নাচগান, হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলে। আনন্দে মেতেছিলেন নবদম্পতিও।

প্রদীপ ও কপিল স্থানীয় হাট্টি সমপ্রদায়ের। আর তাদের সমপ্রদায়ে একসময় বহুবিবাহের প্রচলন ছিল। আর এই প্রথার নাম, হট্টি পলিয়ান্দ্রি। হিমাচলের এই রীতি অনুযায়ী, এক পাত্রীকে দুই ভাই বিয়ের করেন। যা ঘিরে সাধারণ বিয়ের মতোই উদযাপনে মেতে ওঠে গোটা পরিবার। এমনকি, স্ত্রীকে নিয়েও দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো ঝগড়া, অশান্তি হয় না। দুই স্বামীর সঙ্গে মিলেই সংসার করেন কনে। প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে হাট্টি সমপ্রদায়কে তফসিলি জনজাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সমপ্রদায়টি হিমাচলউত্তরাখণ্ডের সীমানায় থাকে। গত ছয় বছরে শুধু বাধানা গ্রামেই এ রকম পাঁচটি বিয়ে হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। ফলে ওই সমপ্রদায়ের একটি অংশ বলছে, এই ঘটনা সামপ্রতিক অতীতে খুব একটা নতুন বিষয় নয়।

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে প্রদীপ বলেন, আমরা সামাজিকভাবে এই বিয়ে করেছি। আর এর জন্য গর্বিত। অন্যদিকে, আরেক ভাই কপিল বলেন, আমার তিনজনেই এই বিয়েতে রাজি হয়েছি। পরস্পরকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি একটি পরিবার হিসাবেই থাকব আমরা। নববধূ সুনীতা বলেন, অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন যে, চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছি। সেটা ভাবলে ভুল হবে। আমি নিজের সিদ্ধান্তে এই বিয়েতে রাজি হয়েছি। আমাদের তিনজনের মধ্যে যে বন্ধন, সেটিকে সম্মান জানিয়ে এই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশিয়ার সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চায় ইউক্রেন
পরবর্তী নিবন্ধচলে গেলেন সৌদির ঘুমন্ত যুবরাজ