ইমন-তাসকিন নৈপুণ্যে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২১ জুলাই, ২০২৫ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

শ্রীলংকার বিপক্ষে টিটোয়েন্টি সিরিজ জয়ের সুখ স্মৃতি নিয়ে গতকাল নিজেদের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টিটোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দু দলের সবশেষ দেখায় হোয়াইট ওয়াশ হয়ে আসা বাংলাদেশ সিরিজটা শুরু করল দুর্দান্তভাবে। ব্যাটেবলে দুর্দান্ত নৈপূণ্য দেখিয়ে তিন ম্যাচের টিটোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শুরু করল বাংলাদেশ। ১১১ রানের লক্ষ্য ২৭ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে যায় ১০ ব্যবধানে। প্রায় নয় বছর পর টিটোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ ২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় এসেছিল। ম্যাচের প্রথম ভাগে বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে জয়ের রাস্তা তৈরি হয়েছিল। আর সে রাস্তায় বেশ ভালভাবেই হেঁটেছেন ব্যাটাররা। তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম সাকিব এবং শেখ মেহেদী হাসানের বোলিং তোপের মুখে পড়ে স্বল্প পুঁজিতে পাকিস্তানকে থামিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ জয়ের জন্য বাকি পথটা দারুণভাবে পাড়ি দিয়েছেন ব্যাটাররা। বিশেষ করে বল হাতে তাসকিন এবং মোস্তাফিজের পর ব্যাট হাতে পারভেজ হোসেন ইমন এবং তাওহিদ হৃদয়ের দায়িত্বশীলতায় দারুণ এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটের সুবিধা নিতে প্রথমে বল করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক সেটা দারুণভাবে বাস্তবায়িত করে বোলাররা। যদিও ব্যাটিংয়ে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল লিটন এবং তানজিদ তামিমকে হারিয়ে, তারপর পারভেজ হোসেন ইমন এবং তাওহিদ হৃদয় আর কোন সুযোগ দেননি পাকিস্তান বোলারদের। দারুন আধিপত্য বিস্তার করে সহজ জয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে টসে হারার পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতলেন লিটন দাশ।

আর টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং এর আমন্ত্রণ জানালেন টাইগার অধিনায়ক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন তাসকিন। পঞ্চম বলে উইকেটও নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। ফাইন লেগ বাউন্ডারিতে মোস্তাফিজুর রহমানের ক্যাচ হন ৪ বলে ৬ রান করা সাইম আইয়ুব । নিজের দ্বিতীয় এবং ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এবার শেখ মেহেদীর আঘাত। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ১১০ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান। তাসকিন আহমেদ ২২ রানে নেন ৩টি উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব আর শেখ মেহেদী হাসান।

১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সালমান মির্জার করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই ফিরেন তানজিদ হাসান তামিম। মিডঅনে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দেন ১ রান করা তানজিদ। নিজের পরের ওভারে আবার সালমানের ধাক্কা। এবার তার শিকার টাইগার অধিনায়ক লিটন দাশ। স্লিপে খুশদিল শাহর দারুন এক ক্যাচে পরিনত হয়ে ফিরেন লিটন। ১ রান করেন টাইগার অধিনায়ক। ৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে পারভেজ হোসেন ইমন এবং তাওহিদ হৃদয় মিলে ৭৩ রান যোগ করেন। ৩৭ বলে ২টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৬ রান করে আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন হৃদয়। তবে পারভেজ হোসেন ইমন দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দিয়ে তবেই ফিরেন। ১৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ২৭ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে দলের জয় নিশ্চিত করেন ইমন। ৩৯ বলে ৩টি চার এবং ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন ইমন। জাকের আলি অপরাজিত ছিলেন ১০ বলে ১৫ রান করে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। তার হাতে পুরষ্কার তুলে দেন বিসিবির পরিচালক আকরাম খান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে সাত লাখ টন গম কিনবে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধ৪ লাখ প্রিপেইড মিটারের মধ্যে এখনো বসেনি দেড় লাখ