সড়কের পিচ ও পাথর উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। কোথাও কোথাও কাঁদা জমে আছে। এসব স্থানে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিকল হচ্ছে যানবাহন। সড়কের এমন বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, শ্রীপুর–খরণদ্বীপ ও সারোয়াতলী ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
বলছিলাম বোয়ালখালী উপজেলার বেঙ্গুরা ডিসি সড়কের কথা। ওই সড়কের দৃশ্য এটি। বেঙ্গুরা থেকে শুরু করে সৈয়দপুর হয়ে চরণদ্বীপ মসজিদঘাট পর্যন্ত সড়কটি ৯.০৫ কিলোমিটারের। এর মধ্যে চার কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা সৈয়দপুর গোরস্থানের টেক থেকে শুরু হয়ে চরণদ্বীপ মসজিদঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কের এই অংশে বালুবাহী ট্রাকগুলো চলাচল করে। এতে সড়কটি জর্জরিত হয়ে গেছে। বর্ষাকালে খানাখন্দ ও কাঁদায় প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে।
গতকাল শুক্রবার সৈয়দপুর গোরস্থানের টেক থেকে চরণদ্বীপ মসজিদঘাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে কাঁদা মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। সড়কটির মাঝ বরাবর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে একটি গাড়ি আরেকটিকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারছে না। বিভিন্ন ভারী যানবাহন, অটোরিকশা, ভ্যান চলছে সড়কে। তবে গর্তের কারণে ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। আবার দুর্ঘটনাও ঘটছে। যাত্রীরা যানবাহনে নিরাপদ নয়। চরণদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মুছা বলেন, এই সড়কটি নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগে। সড়কের কোথাও খানাখন্দ আবার কোথাও ঢিবির মতো উঁচু–নিচু। সড়কটি একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
পোপাদিয়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের মো. জিকু বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে আছে। বর্ষা মৌসুমে গর্তে পানি জমে থাকে। যেকোন সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। সড়কে চলাচলরত যাত্রীরা বলেন, যানবাহনে করে এই সড়ক দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ার কারণে গাড়ি গর্তে পড়ে উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে যাত্রীরা আহত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সড়ক ঘিরে রয়েছে সৈয়দপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হাসান শাহীনুর একাডেমি, কাশেম নুর স্কুল, হাওলা কুতুবিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা ও চরণদ্বীপ রজভীয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসা। এসব প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে আসা–যাওয়া করে। সড়কটি কাদা মাটিতে পরিণত হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন ছাত্র–ছাত্রীরা। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান তারা। চরণদ্বীপ রজভীয়া মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় সড়কের কাঁদা পানিতে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টি পড়লে সড়কের গর্তে পানি জমে থাকে। ফলে মাদ্রাসায় যেতে ইচ্ছে করে না। সড়কটির সংস্কার প্রয়োজন।
এলজিইডির বোয়ালখালী উপজেলার উপ–সহকারী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, বেঙ্গুরা ডিসি সড়কটি ৯.০৫ কিলোমিটার। পল্লী সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় সড়কের তিন কিলোমিটার কাজ চলমান রয়েছে। বাকি তিন কিলোমিটার কাজের প্রস্তাব এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন এলেই সড়কের বাকি অংশ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।