মেশিনই মেশিন বানাচ্ছে। স্ক্রু লাগানো থেকে রঙ করা পর্যন্ত সব কাজই করছে রোবট। গুদামে ২১ তাক উচ্চতা পর্যন্ত জিনিসপত্র সামলে রাখছে রোবট। সেলাই মেশিনভর্তি ১ টন ওজনের ক্যারট রোবটই বয়ে নিয়ে যাচ্ছে নানাস্থানে। তরতর করে উপরে তুলে সামলে রাখছে। প্রস্তুতকৃত মেশিনের হিসেব নিকেশও রাখছে রোবট। আবার শিপমেন্টের সময় তা গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার কাজও রোবটই করছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্টস মেশিনারিজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জ্যাক প্রযুক্তিকে বশ মানিয়ে এভাবে একশ’ জন কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীর কাজ মাত্র দশজন দিয়ে করাচ্ছে। ১০ জনের কাজ করাচ্ছে একজনকে দিয়ে। গতকাল জ্যাক টেকনোলজির সদর দপ্তর এবং ফাইভ জি ক্যাটাগরির স্মার্ট কারখানা পরিদর্শনকালে রোবটের জয়জয়কার চোখে পড়ে।
চীনের তাইজু শহরের অদূরে জ্যাক টেকনোলজির সদরদপ্তর। সাত হাজারেরও বেশি লোক কাজ করেন তাদের গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদনকারী কারখানায়। কয়েক একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত কারখানাটির যে সমস্ত কর্মকাণ্ড ৭ হাজার লোকে করছে রোবটিক সহায়তা না নিলে তা করতে কমপক্ষে ৩০ হাজার লোক লাগতো। ১০ জন শ্রমিকই পুরো কারখানার একটি লাইন চালাচ্ছে। যা মানুষ দিয়ে করতে অন্তত ১০০ জন লোক লাগবে।
পুরো একটি ওয়্যারহাউজ চালাচ্ছে একজন মাত্র মানুষ। সব কাজই করছে রোবটে। ২১ তাক উচ্চতায় ১ টন ওজনের সেলাই মেশিনভর্তি কার্টুন তুলে ফেলছে রোবট। নামিয়েও আনছে। তুলে দিচ্ছে গাড়িতে। যা চলে যাচ্ছে বন্দরে। বিশ্বের ১৫০টি দেশে চীনের যে কোম্পানির বিলিয়ন ডলারের যেসব গার্মেন্টস ইক্যুইপমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে তা এভাবে রোবটের হাতেই পদে পদে উৎপাদন এবং সরবরাহ হচ্ছে। প্রতিষ্ঠার ত্রিশ বছরের মাথায় রোবটিক এই কোম্পানিটি ইতোমধ্যে শুধু চীনেরই নয়, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র প্রযুক্তিকে বশ মানিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চীনের পাশাপাশি সারা বিশ্বের গার্মেন্টস খাতের বিকাশে কাজ করছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের আধুনিকীকরণেও এই কোম্পানির বেশ বড় ভূমিকা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশের এজেন্ট ফজলে করিম বলেন, দেশের বহু কারখানাতেই জ্যাক টেকনোলজির মেশিনারিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে রোবটিক ব্যবহার এখনো বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে তেমন একটি শুরু হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমাদের গার্মেন্টস খাতের উন্নয়ন এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। জ্যাক এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলেও ফজলে করিম উল্লেখ করেন।