ভারী বৃষ্টিতে মাঠ ছিল কর্দমাক্ত, পিচ্ছিল। কোথাও কোথাও জমেছিল পানি। বলের পিছে ছুটতে গিয়ে আছাড় খাচ্ছিলেন ফুটবলাররা। তাতে বাড়ছিল চোটের ঝুঁকি। ভুটানকে হারানোর তুষ্টি থাকলেও ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় মাঠ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন পিটার জেমস বাটলার। কোনো রাখঢাক না করেই বললেন, এমন মাঠে খেলা খেলোয়াড়দের জন্য ক্ষতিকর। সাফ উইমেন’স অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে মঙ্গলবার শান্তি মার্দির হ্যাটট্রিকে ভুটানকে ৪–১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগ টেবিলে শীর্ষে আছে মেয়েরা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাংলাদেশ–ভুটান ম্যাচটি হয়েছে দুই মাঠে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় হয় প্রথমার্ধের খেলা। দ্বিতীয়ার্ধ হয় এ মাঠের লাগোয়া প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে। দুই অর্ধে দুই মাঠে হওয়ায় নিয়ে মজার ছলে একটু খোঁচাও দিয়েছেন বাটলার। ‘গল্পটা দুই অর্ধের, তাই না? প্রথমার্ধ আর দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমবারের মতো আমি প্রথমার্ধ শুরু করেছি এক মাঠে ও দ্বিতীয়ার্ধ শেষ করেছি আরেক মাঠে। আমি এখানে এসেছি খেলাটাকে এগিয়ে নিতে, এর মান বাড়াতে এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার ধারা গড়ে দিতে। কিন্তু এটা (আজকের অভিজ্ঞতা) ক্ষতিকর। আমার মতে, এটি খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজ্জনক।’ ‘খেলা শুরু হওয়ার আগে আমি রেফারি ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের বলেছি, এই মাঠ খেলার অনুপযুক্ত। তবে সৌভাগ্যক্রমে তিন ঘণ্টা পর তারা একটি বাস্তব সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। খেলা আরেকটা মাঠে সরিয়ে নেওয়াটা ছিল কমনসেন্স।
আমি আনন্দিত যে, আমরা খেলা শেষ করতে পেরেছি এবং দ্বিতীয়ার্ধে মোমেন্টাম তৈরি করে খুবই ভালো ফুটবল খেলেছি।’ নেপাল ম্যাচের একাদশ থেকে এ ম্যাচে বড়সড় পরিবর্তন আনেন বাটলার। শান্তি মার্দি ও বন্যা খাতুন ছাড়া বাকি নয় নতুনকে পরখ করে নিয়েছেন এই ইংলিশ কোচ। নতুনদের পারফরম্যান্সের অভিভূত তিনি। ‘আমরা একদল মেয়ে পেয়েছি, যারা লম্বা সময় ধরে কোনো ম্যাচ খেলেনি। সাগরিকাও ছিল না (লাল কার্ডের কারণে)। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রথম দুই ম্যাচ খেলে পরের ম্যাচে নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়দের নামাব। এদিন নয় জন নতুন খেলোয়াড়কে খেলিয়েছি শুরুতে এবং তাদের খেলায় আমি খুশি।’
‘তৃষ্ণা প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। শান্তি দুর্দান্ত এক খেলোয়াড় হয়ে উঠবে। ফাইনাল থার্ডে ফিনিশিংয়ের ক্ষেত্রে উন্নতি দরকার উমহেলার। তবে সে দুর্দান্ত এক প্রতিভা। বন্যা, রুপা ও কাননও ভালো খেলেছে। এই মাঠে খেলা খুবই কঠিন, যেখানে শট মেরে বলকে ১০ মিটার দূরেও নেওয়া যায় না। সুরমাকে মাঠে ফিরিয়েছি, তাকে অধিনায়ক করেছি। সে এখনো ৯০ মিনিট খেলার জন্য প্রস্তুত নয়। আমি তাকে নিয়ে তাড়াহুড়া করতে চাই না।’ বাটলারের মূল লক্ষ্য অবশ্য বয়সভিত্তিক এই আসর নয়, আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়াতে হতে যাওয়া উইমেন’স এশিয়ান কাপ। ভুটান ম্যাচে নতুনদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ কোচের মনে হচ্ছে, তার দলের গভীরতা বাড়ছে। ‘এটা ভাবতে ভালো লাগে যখন দেখি যে, বেঞ্চে স্বপ্না, মুনকি ও আফঈদার মতো খেলোয়াড় আছে। এমনকি জয়নবও। এখন হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে স্কোয়াড বড় হচ্ছে, শক্তিমত্তা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে। এই ধারাবাহিকতা ও অগ্রগতির ধারা ধরে রাখতে হবে আমাদের।’