বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা

শাহেদ সরওয়ার | সোমবার , ১৪ জুলাই, ২০২৫ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

প্রত্যেক মায়ের উচিত তার বাচ্চাদের সামনে বাবার সম্পর্কে এমনভাবে কথা বলা যেন শিশুরা খুব ছোটবেলা থেকেই বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা শিখে নেয়। মায়ের বলা উচিৎ বাচ্চারা, যখন তোমাদের বাবা বাহির থেকে বাসায় ফিরবে, তখন সবাই মিলে হাসিমুখে এগিয়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরো। বলো, ‘আমরা তোমায় ভালোবাসি।’ তোমাদের বাবা সারাদিন রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে, কঠোর পরিশ্রমে ও ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফেরেনশুধু তোমাদের মুখে হাসি দেখার আশায়। তিনি হয়তো বলেন না, চোখে জল রাখেন না, কিন্তু তার নিঃশব্দ প্রতিটি মুহূর্তেভালোবাসার স্পর্শ লুকানো থাকে। বাবারা তাদের ভালোবাসা শব্দে নয়, কাজে প্রকাশ করেন। তোমাদের স্কুল ফি সময়মতো দেওয়া, তোমাদের বেড়ে উঠাতে যেন কষ্ট না হয়, রাতে না খেয়ে তোমাদের পেট ভরানো, ঘুম ভেঙে তোমাদের ঘুমাতে দেখাসবসময় বাচ্চারা সুখে থাকা, অসুখে আদর যত্নে সুস্থ রাখা, এসবই তাদের না বলা ভালোবাসার ভাষা। বাবা মানে সেই ছায়া যিনি নিজের স্বপ্ন গুলো একপাশে রেখে তোমাদের ঘরের আলো জ্বালাতে নীরবে লড়ে যান। তোমরা যদি তাকে একটু ভালোবাসা দাও, একটু হাসিমুখে পাশে থাকোসেটাই হবে তার সব ক্লান্তির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

বাবা কেবল একজন রোজগার করা মানুষ নয়, তিনি একটি পরিবারের নীরব আশ্রয়, যিনি তার ভালোবাসা লুকিয়ে রাখেন ত্যাগের আড়ালে। সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা চিরন্তন। বাবা মানে ভরসার জায়গা, পরম নিভর্রতার প্রতীক, এক সাগর ভালোবাসা। বাবা মানে উত্তপ্ত সূযের্র নিচে সন্তানের শীতল ছায়া, নির্ভরতার আকাশ, নিরাপত্তার চাদর। বাবা সন্তানের মাথার ওপর বটবৃক্ষের ছায়ার মতো, যার স্নেহ অবারিত ধারায় শুধু ঝরতেই থাকে। বাবা সব সন্তানের কাছেই পরম পূজনীয়, সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। বাবার মাধ্যমেই সন্তানের জীবনের শুরু। বাবার ছায়ায় বড় হওয়া সন্তান জানে কতটা নির্ভরতায় বেড়ে উঠেছে সে, আবার জীবন কত কঠিন, তা জানে বাবাহীন বড় হওয়া সন্তানরা। যার বাবা নেই একমাত্র সেই জানে বাবা না থাকার বেদনা। বাবা শব্দটি পৃথিবীর সর্বত্র নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গেই উচ্চারিত হয়। কারণ সন্তানের ভালোর জন্য জীবনের প্রায় সবকিছুই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করতে হয় বাবাকে। বাবার রূপে ফুটে ওঠে কখনো শাসন, কখনো ভালোবাসা। বাবা শুধু আমাদের জীবনের প্রথম নায়কই নন, বরং তিনি একজন গাইড, শিক্ষক, এবং জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি।

বাবা সন্তানের জীবনের প্রধান রোল মডেল এবং পথপ্রদর্শক। বাবার ভালোবাসা এবং ত্যাগের মূল্যায়ন করতে এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে বাচ্চারা সব সময় সচেষ্ট থাকা উচিৎ। বাবার প্রতিটি শিক্ষার মর্ম বাচ্চারা বুঝতে পারা এবং তা জীবনের মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করাও জরুরি। প্রতিটি সন্তানের কাছেই তার বাবা পৃথিবীর সেরা। বাবার কাছে সন্তানের প্রতি যে ভালোবাসা, যত্ন এবং ত্যাগ থাকে, তা অনন্য ও অমূল্য। তাই বাবার প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা চিরকালই অটুট থাকুক যুগ যুগান্তরে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কেন্দ্রের টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার পুন: চালু করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধআত্মিক উন্নয়ন