আমরা অন্যের কাছে নিজের প্রশংসা শুনতে যতটা না উদগ্রীব, তার চাইতে বেশি অনীহা অন্যের প্রশংসা করার বেলায়। সামান্য একটা শব্দ ‘প্রশংসা’, ‘কৃতজ্ঞতা’ বা ‘মূল্যায়ন’। খুবই চেনা ও সাধারণ হলেও, এই শব্দের কার্যকারিতা ভীষণ শক্তিশালী। জীবনে কিছু অনুভব মানুষকে অন্যের কাছে আপন, সম্পর্ককে গভীর, এবং সমাজকে সুন্দর করে তোলে। আমরা প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী কিংবা অপরিচিত কেউ। কেউ যদি আমাদের জন্য একটু সাহায্য করে, একটু ভালো ব্যবহার করে, কিংবা মন ছুঁয়ে যায় এমন কিছু করে সেই মুহূর্তে আমরা যদি তাকে একটুখানি বাহবাহ দিই, সেটি তার মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেয়। একজন শিক্ষকের প্রতি প্রশংসা হতে পারে তার কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি। একজন বন্ধুর প্রতি প্রশংসা হতে পারে তার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
একটি ছোট্ট ‘ধন্যবাদ’, ‘আমি খুব কৃতজ্ঞ’ ‘ভীষণ ভালো হয়েছে’, ‘আরো ভালো হবে’ এই কথাগুলো সম্পর্ককে শক্ত করে, মানুষকে অনুপ্রাণিত করে এবং ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়। যাদের প্রশংসা বা কৃতজ্ঞতা দেওয়া হয়, তারা তাদের দায়িত্ব আরও আন্তরিকভাবে পালন করতে চায়। প্রশংসা না থাকলে অনেক সময় মানুষ নিজেকে অবহেলিত মনে করে, কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। কৃতজ্ঞতাবোধ থাকলেই কাউকে খুব সহজে প্রশংসা করা যায়। কেউ যদি আপনার জীবন বা কাজকে সহজ করার জন্যে কিংবা এগিয়ে দিতে, যে কোন ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহযোগিতা করে থাকে, তাকে অবশ্যই বলুন, ‘আপনাকে ধন্যবাদ, আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ’। এতে যে অই মানুষটা আনন্দিত হবে, শুধু কিন্তু তাই নয় দেখবেন আপনার নিজের মধ্যে অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করছেন। প্রশংসা বা কৃতজ্ঞতা কোনো দামি উপহার নয়, কিন্তু এর প্রভাব অনেক গভীর। তাই, আজ থেকেই শুরু হোক একটা ছোট্ট শব্দ ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা দিয়ে দিয়ে দিনটা সুন্দর করে তোলার অভ্যাস।