শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আইনজীবী আমির হোসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১০ জুলাই দিন রাখে ট্রাইব্যুনাল। এর আগে গত ১ জুলাই প্রসিকিউশন শুনানি করে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানিয়েছিল। আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের চার্জের বিরুদ্ধে আমরা ডিসচার্জের আবেদন করেছি। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং কোনো ভিত্তি নেই। দীর্ঘ শাসনামলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণমূলক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
শুনানিতে শেখ হাসিনার আইনজীবী আওয়ামী লীগ শাসনামলে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল চালুসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ তুলে ধরেন। আইনজীবী বলেন, হাসিনা দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেন।
কৌঁসুলি মোনাওয়ার হোসাইন তামিম বলেন, ‘আজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চার্জ গঠনের শুনানি ছিল। ইতোপূর্বে প্রসিকিউশন অভিযোগ গঠনের শুনানি করেছে। আজকে আসামিপক্ষের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল এবং শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। আজ আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে হাজির করা হয়েছে।’ কৌঁসুলি তামিম বলেন, আগামী ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন অভিযোগ গঠন হবে কি হবে না সেটি নির্ধারণ করবেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এই তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সুর্র্নিদিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিপক্ষ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন এবং প্রসিকিউশন অভিযোগ গঠনের আবেদন করেছেন।
আদালত অভিযোগ গঠন করলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মানবতাবিরোধী মামলার বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর তা শুরু হবে সেই আদালতে, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং অভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে থাকা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়। গত ১ জুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সেদিন সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। তনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শুরু করার ৬ মাস ২৮ দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে দেশব্যাপী যে মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যাকাণ্ড, গুলি করে আহত করা, লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মত যে সমস্ত অমানবিক কর্মকাণ্ড হয়েছিল, এই সমস্ত কর্মকাণ্ডগুলো তদন্ত করে প্রধান মাস্টারমাইন্ড এবং হুকুমদাতা হিসেবে সুপিরিয়র কমান্ডার হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছেন।












