জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেওয়া হবে না, হেফাজতের হুঁশিয়ারি

| রবিবার , ৬ জুলাই, ২০২৫ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনএইচআরসির কার্যালয় খোলার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে হেফাজতের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় খুলতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যার সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় কাঠামো ইসলামী মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই দেশের সংস্কৃতি, পরিবারব্যবস্থা, নৈতিক রীতিনীতিকে অক্ষুণ্ন রাখা আমাদের ধর্মীয় ও নাগরিক দায়িত্ব। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কার্যালয় স্থাপনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করছি। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকায় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন বলে সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। শাপলা চত্ত্বরের ঘটনা, চব্বিশের ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রূহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশব্যাপী দোয়ামাহফিল ও আলোচনা সভার এই কর্মসূচি পালন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ঢাকায় আয়োজিত আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বলেন, আল্লাহতায়ালা মানুষকে নারী ও পুরুষদুই স্বতন্ত্র পরিচয়ে সৃষ্টি করেছেন। ইসলাম একমাত্র বৈধ ও স্বীকৃত বিবাহের পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে পুরুষ ও নারীর মধ্যে। নারীর সঙ্গে নারীর কিংবা পুরুষের সঙ্গে পুরুষের তথাকথিত সমকামিতা ইসলাম এবং প্রকৃতি উভয়ের পরিপন্থি। এসব বিকৃত পশ্চিমা ধারণা সমাজে অবাধ যৌনাচার, পারিবারিক অবক্ষয় ও নৈতিক ধ্বংস ডেকে আনে।

অতীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের নামে ইসলামি শরিয়াহ, পারিবারিক আইন ও ধর্মীয় মূল্যবোধে হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, এসব হস্তক্ষেপ একদিকে যেমন জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত, অন্যদিকে মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতিরও পরিপন্থী। তাই বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেয়া হবে না।

তিন বছরের জন্য ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনের (এইচআরসি) একটি মিশন অফিস চালু করার পক্ষে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) অনুমোদন দেওয়া হয়।

হেফাজতের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, মানবাধিকারের নামে যদি ধর্মীয়, পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামোতে বিদেশি সংস্কৃতির চাপানো নিয়ম চালু করার চেষ্টা করা হয়, তবে ঈমানদার জনতা তা কখনো মেনে নেবে না।

হেফাজতের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব জুনাইদ আল হাবিবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনসংগঠনের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, মাহফুজুল হক প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাই সনদ নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে, অভিযোগ নাহিদের
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে একজন আহত