খাগড়াছড়িতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ভারী বর্ষণে ভূমি ধসের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে সিন্দুকছড়ি–জালিয়াপাড়া সড়ক। ২৪ কিলোমিটার সড়কের ৩৭ পয়েন্টে মাটি ধসে ভাঙনের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। দৃষ্টিনন্দন সড়কটি রক্ষায় দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়ির সিন্দুকছড়ি–জালিয়াপাড়া সড়কটি সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক হিসেবে পরিচিত। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় ভারী বর্ষণে সড়কের অন্তত ৩৭টি পয়েন্টে মাটি ধসে গেছে। সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে নান্দনিক সড়কটি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন কবলিত অংশগুলো সংস্কার করা হলে সড়কটি ঝুঁকির মুখে পড়বে।
স্থানীয় বাসিন্দা মংপ্রু চৌধুরী বলেন, এই সড়কটি নির্মিত হওয়ায় আমাদের দূরত্ব কমেছে। জেলা শহর এড়িয়ে এই সড়ক ব্যবহার করে আমরা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারি। আমাদের দূরত্ব ও ভোগান্তি কমেছে। ট্রাক, সিএনজি মাহেন্দ্র, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে পারছে। কিন্তু জুনের শুরুতে ভারী বর্ষণে একাধিক স্থানে ভেঙে গেছে। এটি তাড়াতাড়ি মেরামত করতে হবে।
জীবন ত্রিপুরা ও ধনঞ্জয় চাকমা নামে আরও দুই বাসিন্দা বলেন, সিন্দুকছড়ি–জালিয়াপাড়া সড়কটি খুবই গুরত্বপূর্ণ। বর্ষায় সড়কের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটি ধসে গেছে। পাহাড় ধসে মাটি পড়ায় সড়কের বেশ কিছু পয়েন্টে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামত করতে হবে। সড়কটি ভেঙে গেলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
মহালছড়ি–সিন্দুকছড়ি–জালিয়াপাড়া সড়কটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। পাহাড়ের বুক চিরে চলা যাওয়া সড়কটি ভাঙনের মুখে পরায় হতাশ পর্যটকেরাও। চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরুল আলম, নিজাম উদ্দিন বলেন, বাইক নিয়ে বন্ধুরা মিলে বেড়াতে আসলাম। এর আগেও এখানে এসেছিলাম। তবে এবার দেখছি সড়কটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। কয়েক জায়গা অতিরিক্ত মাটি ধসে গেছে। এটি দ্রুত মেরামত না করলে সড়কটি হয়তো রক্ষা করা যাবে না।
সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখা ও সড়কের ধস রোধে জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতারাও। খাগড়াছড়ি ট্রাক সমিতির সভাপতি মো. আসলাম কালু বলেন, সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় ধস হয়েছে। যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে হলে সড়ক বিভাগকে অনুরোধ করব তারা যাতে দ্রুত সড়কটি মেরামত করে। এতে মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।
এদিকে সড়কটি রক্ষায় ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান। তিনি বলেন, যেহেতু এখানে ম্যাসিভ ধস হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাহাড় ধসের মাটি সরানো হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে পাহাড় ধস রোধে আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা কাজ করব।
২০২৩ সালে দৃষ্টিনন্দন সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে নির্মাণকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ২০ ইসিবি।