করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) দুই মাস পেছানোর দাবিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কতিপয় শিক্ষার্থী। আর মাত্র দুইদিন পর শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা, এরমধ্যে হঠাৎ শিক্ষার্থীরা এমন দাবি তুলেছেন। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব রেখে আসন বিন্যাসের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও করেছেন তারা। গতকাল রোববার দুপুর ১টা থেকে বিকাল প্রায় চারটা পর্যন্ত শিক্ষাবোর্ডের সামনে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে ৩০–৩৫ জন শিক্ষার্র্থী অংশ নেন। এ সময় তারা ‘সুরক্ষা না পরীক্ষা, সুরক্ষা সুরক্ষা’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
জানা গেছে, প্রথমে তারা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে বোর্ডের মূল ফটক পার হয়ে সামনের চত্বরে ঢুকে পড়েন। তখন শিক্ষাবোর্ডে কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে প্রবেশের ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সামনের চত্বরে বসে পরীক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টারও বেশিসময় ধরে স্লোগান দেন। এরপর বের হয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে এর সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষাবোর্ডের একজন উপ–পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গিয়ে তাদের দাবির বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানানোর আশ্বাস দেওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে তারা চলে যান।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ছে। অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্য ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত নই। এখন পরীক্ষা নেওয়া হলে আমাদের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অন্তত দুই মাস পরীক্ষা স্থগিত রেখে একটি যৌক্তিক সময়সূচি নির্ধারণ করা হোক।
এদিকে ফটকে তালা ঝুলিয়ে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে শিক্ষাবোর্ডে সেবা নিতে আসা লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। জরুরি প্রয়োজনে বোর্ডের কর্মকর্তা–কর্মচারীরাও বের হতে পারেননি। শিক্ষাবোর্ডে আসা এইচএসসি পরীক্ষার্থীর এক অভিভাবক জানান, দুইদিন পর পরীক্ষা শুরু হবে। এ অবস্থায় পরীক্ষা পেছালে তাদের পড়ালেখা এবং পরীক্ষার প্রতি অনীহা চলে আসবে। করোনা পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেনি যে পরীক্ষা পেছাতে হবে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, কয়েকজন পরীক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছিল। আমরা একজন ডেপুটি কন্ট্রোলারকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি তাদের বুঝিয়ে বলেছেন যে পরীক্ষা পেছানোর বিষয়টি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের হাতে নেই। তবুও আমরা তাদের দাবি মেইল করে আন্তঃবোর্ডে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন। এখন মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেয় সেভাবে হবে। বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তারা চলে গেছে।