পৃথিবীতে মানুষকে মহান আল্লাহপাক সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সেই সেরা জীব মানুষই আমরা নানান ভাগে, নানান মতে, নানান ধরণে বিভক্ত। এমনকি প্রতিটি মানুষের মাঝে কমবেশি শারীরিক ও মানসিক ভিন্নতা বিরাজমান। কোটি কোটি মানুষের ভিড়ে একই রকম চেহারার মানুষ নিতান্তই কম বললেই চলে। আর মানুষ হিসেবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ সফল জীবনের অধিকারী নই। প্রতিটি মানুষের মাঝে কিছু না কিছু সংকট, অভাব বা শুন্যতা অবশ্যই রয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ প্রকাশ করলেও অত্যন্ত ধৈর্য্যশীল মানুষরা নিজের দুঃখ, সংকট, দুর্বলতাকে চাপিয়ে রাখে বা নিজে নিজে সয়ে যেতে ভালোবাসে। আর আমাদের দেশে প্রচলন আছে তেলে মাথায় বেশি তেল দিতে অভ্যস্ত। ভরা কলসিতে আমরা পানি বেশি দিই। অর্থাৎ আমরা যাদের সব আছে বা অভাব নেই তাদেরকে আরো বেশি দিতে ভালোবাসি বা সামাজিক মর্যাদা নামক অহমিকা প্রতিযোগিতায় অন্যকে খুশি করা কিংবা দেখানোর মানসিকতায় সামর্থ্যবানদের আরো বেশি উপহার দিতে পছন্দ করি। বিপরীতে যারা নিতান্তই গরীব বা দরিদ্র তাদেরকে বেশি দেয়ার প্রতিযোগিতা না করে উল্টো ক্ষুদ্র কিছু দিয়ে বিদায় নিতে চায়। কি অদ্ভুদ আমাদের মানসিক চিন্তাধারা। আমাদের প্রত্যেকের মাঝে কিছু না কিছু সংকট চলমান থাকে। এত ঁিনখুত বাস্তবতার মাঝেও আমরা অনেক সময় মনে করি আমাদের মধ্যে তেমন সংকট বা দুর্বলতা নাই। সেজন্য অন্যের দুর্বলতাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিতে পারি না। অন্যের দুর্বলতাকে আমরা বেশি অবহেলা বা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। চিন্তা করি না আজকে অন্যের যে সংকট চলমান সে সংকট বা দুর্বলতা আমার নিজের হবে না বলে কখনো ভাবতে নেই। মনে রাখতে হবে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হলেও মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে কোন না কোনভাবে কিছু না কিছু বিষয়ে অবশ্যই অপরিপূর্ণতা দিয়েছে যাতে করে আমরা অহমিকা থেকে দূরে থাকতে পারি। জীবনে সংকট, নানান বিষয়ে দুর্বলতা বা অপরিপূর্ণতা থাকবে তাই বলে হতাশ হওয়া যাবে না। কেননা জীবনে দুঃখ, বেদনা, হতাশা, সংকট জীবনের পরম অংশ এগুলোকে মোকাবেলা করে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ সংকল্প হতে হবে। মনে রাখতে মনের সাহস, একাগ্রতা, আত্নবিশ্বাস, দৃঢ় মনোভাব আর প্রচুর পরিশ্রমই আমাদেরকে সাফল্যমান মানুষ হিসেবে নিজেকে পরিণত করতে। জীবনের কঠিনতম সংকটকাল বা দুঃখবোধে কখনো ভেঙে পড়তে নেই। এমনকি কঠিনতম সংকট বা দুর্বলতাগুলো যেকারো সাথে শেয়ার করতে নেই। বরং ঐ কঠিন দুঃসময়ে নিজেকে আরো বেশি সাহসী ও আত্নপ্রত্যয়ী মানুষ এই কঠিন দুঃসময়গুলো একাকি লড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আর এ লড়াই অনেক সময় সুনির্দিষ্ট কিছু প্রিয়জন ছাড়া তেমন বেশি কারো সাথে শেয়ার না করায় উত্তম। আসুন যে কোনো সংকট, দুঃসময় ও দুর্বলতা মোকাবেলায় নিজেকে আরো বেশি আত্নপ্রত্যয়ী, আরো বেশি দৃঢ় মনোভাবের অধিকারী করে তুলি। প্রকৃতির মত নিজের সুখ ও দুঃখকে দুটোকেই উপভোগ করতে শিখি। তাতে জীবন কখনো গতি হারাবে না।












