চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না : প্রেস সচিব

বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ৩ বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ২৬ মে, ২০২৫ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিন দেশের তিন কোম্পানির সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে আমরা গভীর সংস্কার করতে চাচ্ছি। আমরা চাচ্ছি যেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানি বন্দর ব্যবস্থাপনা করতে পারে। এজন্য আমরা বিদেশের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছি। দুবাই পোর্ট ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কথা বলছি; এপি মুলার মার্কসের সঙ্গে কথা বলছি এবং পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে কথা বলছি। ফলে যেটা হবে, ওরা যদি ম্যানেজ করেন, তাহলে আমাদের বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। গতকাল রোববার রাজধানীতে পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফটক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেস সচিব বলেন, আমরা বন্দর কাউকে দিচ্ছি না। বন্দরে যেন তারা বিনিয়োগ করেন, ম্যানেজ করেন। এখন পর্যন্ত আমরা তাদের কাছ রেসপন্স পেয়েছি যে, তারা তিন বিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগ করবে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রধান শর্ত তারা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াবে। তারা দেখবে উৎপাদন করার দ্রুত রপ্তানিআমদানি করা যায় কিনা। বৈশ্বিক যে ট্রেড লড়াই শুরু হয়েছে, বড় দেশগুলোর সেইসব বিনিয়োগকারী নতুন দেশ খুঁজছে। বাংলাদেশ সেই দেশ যা বিনিয়োগে জন্য সহায়ক। এজন্য বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

প্রেস সচিব বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা লেভেল যদি দ্রুত আমরা এগিয়ে নিতে পারি, সেটার একটা মাল্টিপেয়ার ইফেক্ট হবে পুরো বাংলাদেশের ইকোনমিতে। পুরো বিশ্বে এখন ট্রেডের যে একটা প্রোটেকশনিজম চলছে, সেই জায়গা থেকে আমরা একটা বেনিফিটের জায়গায় আছি। দ্রুত এটা থেকে বেনিফিট পেতে পারি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সময় ১০০টা ইকোনমিক জোন করা হয়েছিল। সে জোনগুলো পড়ে আছে, সেখানে মহিষের বাথান হয়ে গেছে। কেউ আসছে না তো। ইনভেস্টররা না আসার মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের বন্দরের সক্ষমতা নেই। আমাদের এখান থেকে দ্রুত একটা জিনিস বানিয়ে নেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই।

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এফডিআই আসা শুরু হয়েছে। জুনে দেখবেন যে, চীন থেকে একজন কমার্স মিনিস্টারের নেতৃত্ব ১৫০ জনের মতো চাইনিজ বিনিয়োগকারী আসবেন। তারা যদি বাংলাদেশে আসেন, আমরা কর্মসংস্থানে যে প্রবৃদ্ধি চাচ্ছি, সেটা খুব দ্রুত হবে।

সংলাপে পুঁজিবাজার নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, কোনো গোষ্ঠীতন্ত্রের কাছে বাজারকে জিম্মি করে রাখতে দেবে না সরকার। আগে তো সব পলিসি করা হতো কিছু গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে। এভাবে লুট করায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ডাকাতদের আড্ডা হয়ে গেছে। এখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কেবল প্রতারণার শিকার হয়েছেন, পুঁজি হারিয়েছেন। বিতর্ক এড়াতে ও বিশ্ব মানের বাজার তৈরি করতে সরকার বিদেশি পরামর্শকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্তে গেছে। এই কাজে মাস তিনেকের মতো সময় লাগবে।

দেশিবিদেশি পরামর্শকরা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে দেশের পুঁজিবাজার কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি থাকবে না মন্তব্য করে শফিকুল বলেন, কোনো গোষ্ঠী যেন মনে না করেন যে, এখান থেকে আমি আমার মতো করে টাকা বানাব। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে কাজ করবে সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি চাকরি আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি
পরবর্তী নিবন্ধদক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে শুরু, সারা দেশে মানুষের কাছে যাবে এনসিপি