দিনভর সচিবালয়ে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আন্দোলন–বিক্ষোভের মধ্যেই রাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার; যাতে সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, আনুগত্যহীনতা, বিশৃঙ্খলার মত ঘটনায় বরখাস্তের মত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। গতকাল রাতে ’সরকারি চাকরি আইন–২০১৮’ এর সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাবে সায় দেয়। রোববার সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তারা সেখানে মিছিলও করেন। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তি, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। আর এ আইন করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রয়োজন মনে করছে বলেই এ আইন করছে। এরমধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়।
এতে পুরোনো আইনের সঙ্গে ’৩৭ক’ নামের আরেকটি ধারা সংযোজন করা হয়। নতুন ধারায় একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিসের পর দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে– কেউ যদি এমন কাজ করে যা অনানুগত্যের সামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে;
এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে। কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উস্কানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে;
কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।
এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
এসব অসদাচরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, সাত দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ জানিয়ে জবাব না দিলে আবার সাত দিনের নোটিস দেওয়ার পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা–কর্মচারীর আপিল রাখার সুযোগ রয়েছে। দণ্ডের নোটিস হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করা যাবে।