নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কয়েকটি সুপারিশের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, নারী সংস্কার কমিশনে কোনো ইসলামিক স্কলার রাখা হয়নি। এটা তাদের ইসলামোফোবিয়ার একটি উদাহরণ। যৌনকর্মীদের শ্রমিকের স্বীকৃতি দিয়ে অন্যায়কে বৈধতা দেয়া হচ্ছে। বৈবাহিক ধর্ষণ কথাটির মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এ কমিশন কেবল এলিটদের কাছে গিয়ে সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছে। আর কারও কাছে যায়নি তারা। মূলত তারা পশ্চিমা কালচারকেই বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। আর এভাবে একটা অন্যায়কে বৈধতা দেয়ার মাধ্যমে তারা অনেক অন্যায়ের পথ সুগম করে দিচ্ছে। এটা নারীদের জন্য অপমানজনক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামসুন নাহার মিতুল, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস আদন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী নওশিন নাওয়াল ফাতিমা।
দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামসুন নাহার মিতুল বলেন, সংস্কার কমিশন রিপোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে, ধর্ম (এখানে ধর্ম মানে ইসলামকে বুঝানো হয়েছে), দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রথা– এই তিনটি নারীদের বৈষম্যের মূল কারণ এবং বৈষম্য দূর করতে না পারারও মূল কারণ। তাদের ভাষ্যমতে সমস্ত লিঙ্গ সংক্রান্ত সহিংসতার মূল তিনটা কারণের একটা হচ্ছে ইসলাম। তাদের মতে খোদ ধর্মটাই সমস্যা।
দর্শন বিভাগের ওই শিক্ষক আরো বলেন, যৌনকর্মীদের নারী কমিশন সম্মানজনক পুনর্বাসন অথবা বিকল্প সম্মানজনক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে, এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো রকম আলাপ আলোচনা ছাড়াই তাদেরকে যৌন শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের যে সুপারিশ করেছেন তা আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ নৈতিকতা ও সংস্কৃতির পরিপন্থী। এটার বৈধতা মানে অন্যায়কে বৈধতা দেয়া। তিনি বলেন, এছাড়া বৈবাহিক ধর্ষণ এবং ট্রান্সজেন্ডার নারী– এ দুটোই খুবই সেনসিটিভ ইস্যু। এটাও আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সামাজিক সাংস্কৃতির পরিপন্থী। ট্রান্সজেন্ডার বর্তমানে খুবই আলোচিত এবং বিতর্কিত একটি ইস্যু। এর মাধ্যমে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটা সংঘাত তৈরি করবে। এটি কোনোভাবেই নৈতিক ও ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।