বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভাটারা থানার এক হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকাই সিনেমার নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারাজানা হক। এদিন সকাল ৯টার দিকে নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। ঘণ্টা খানেক বাদে তাকে এজলাসে নেওয়া হয়।
আদালতে ভাটারা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জাকির হোসেন জানান, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নায়িকাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিল্লাল ভূঁইয়া। এ বিষয়ে শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
এদিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে নুসরাত ফারিয়াকে। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
নুসরাতের পক্ষে তার আইনজীবী ফারহান মোহাম্মদ আরাভ, মোর্শেদ আলম শাহিন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তারা দাবি করেন, নুসরাত ৯ জুলাই বাংলাদেশ থেকে কানাডা যান। দেশে ফেরেন ১৪ আগস্ট। তিনি আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন। খবর বিডিনিউজের।
রাষ্ট্রপক্ষে পিপি ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। ঘটনার সময় নুসরাত ফারিয়া দেশের বাইরে ছিলেন কিনা, আন্দোলনের পক্ষে পোস্ট করেছেন কিনা এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন বিচারক। প্রতিবেদন পাওয়ার পর জামিনের বিষয়ে ২২ মে ফের শুনানি হবে।
থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় রোববার সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন নুসরাত ফারিয়া। এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি গত মার্চে নায়িকা নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, নায়ক জায়েদ খানসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীসহ ২৮৩ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানা গত ২৯ এপ্রিল তা এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় গুলি চালানো হলে তা এনামুলের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নির্ভর ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ফারিয়া।
বিনোদন জগতের মানুষেরা ফ্যাসিস্টকে সহযোগিতা করে গেছে : শেখ হাসিনার গত দেড় দশকের শাসনামলে বিনোদন জগতের মানুষেরা ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। এছাড়া জুলাই আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনা হত্যা করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই কাজে অভিনেতা–অভিনেত্রীরা যে কোনো স্থান থেকে সহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে হত্যাচেষ্টা মামলায় নুসরাত ফারিয়ার জামিন শুনানিতে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। দেশে যাতে আর কোনো ফ্যাসিস্টের জন্ম না হতে পারে এজন্য সেই গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি। শুনানিতে চিত্রনায়ক ও ঢাকা–১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদকেও খোঁজা হচ্ছে বলে আদালতকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানিয়েছেন।