শেখ হাসিনার সম্পদে গড়মিল, মামলা হবে : দুদক চেয়ারম্যান

সচল হচ্ছে ১৯ বছর আগে করা মামলা । সাত বছর আগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগেও মামলার আবেদন

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী হলফনামায় যে সম্পদের হিসাব দিয়েছেন তার সঙ্গে বাস্তবের গড়মিল পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ নিয়ে তদন্ত কাজ করছে দুদক। এরই মধ্যে শেখ হাসিনার নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে বাস্তবের গড়মিল পাওয়া গেছে। আমরা সেই অনুযায়ী মামলামোকদ্দমার দিকে যাব। গতকাল রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়হবিগঞ্জের মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এক গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনার বোন ও সন্তানের বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

১৯ বছর আগে হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা সচল হচ্ছে : শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেড় দশক আগে বাতিল হওয়া ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতির মামলা সচলের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনদুদক। ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য গতকাল এ দিন ঠিক করে দেয় বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ।

দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান রয়েছে। তিনি একজন এজাহারভুক্ত আসামি। মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলা বাতিলের কোনো সুযোগ নাই। এ কারণে মামলাটি সচল করা প্রয়োজন।

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বেসরকারি তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি হয়েছিল। এতে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনকে আসামি করেছিল দুদক। এরপর ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হয়। তখন আদালত ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। পরে শেখ হাসিনার আবেদনে এই মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে হাই কোর্ট।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি বাতিলে রুল শুনানির উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর হাই কোর্ট বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে রায় দেয়। উচ্চ আদালতের এই রায়ের পর দীর্ঘ দেড় দশক আপিল বিভাগে যায়নি দুদক।

সাত বছর আগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলার আবেদন : সাত বছর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী, যিনি এখন আইনজীবী হিসেবে কর্মরত। মো. একরামুল হক নামে এই আইনজীবী গতকাল ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মনিরুল ইসলামের আদালতে আবেদনটি করেন।

তার জবানবন্দি গ্রহণ করে এ ঘটনায় মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) আছে কিনা, আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে শাহবাগ থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। নিম্ন আদালতে কাজ করা এই আইনজীবী তথ্য দিয়েছেন।

মামলায় আরো যাদের আসামি করার জন্য আবেদন করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল হক হানিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী, পুলিশের সাবেক আইজি জাবেদ পাটোয়ারী, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, রমনার সাবেক ডিসি সাজ্জাদুর রহমান, শাহবাগ থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলইডি সাইন ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে যা হলো
পরবর্তী নিবন্ধঅতিরিক্ত আইজিপি হলেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ