দেশ হতে দেশান্তরে

ষান্ডার তৈলপ্রীতি

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ১৮ মে, ২০২৫ at ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ

এ গ্রহের ভূগোল নিয়ে তথাকথিত মানব সভ্যতার সেই প্রাতঃকাল থেকেই মনুষ্য প্রজাতি সময়ে সময়ে নানান রকম গোল পাকিয়ে ভয়ংকর সব রক্তারক্তি কাণ্ড করার কারণেই কি না জানি না, ছোটবেলা থেকেই ভূগোলের ব্যাপারে মাথায় আমার গোল বেঁধে যেত অহরহ! ফলে ভূগোল বিষয়টা মোটেও পছন্দের ছিল না স্কুল জীবনে। তদুপরি দিককানা হওয়ায় আজও যে কোন ম্যাপ হাতে নিলেই ধন্দে পড়ে যাই; ম্যাপের উপর ও নীচ দিকের কোনটা উত্তর আর কোনটা দক্ষিণ, তা নিয়ে! অতএব যতোই জানি না কেন, সৌদির আল খোবার শহরটির গোড়াপত্তন হয়েছিল বাহরাইনি মৎসজীবী উপাজতির হাতে, তারপরও আন্দাজ করতে পারিনি সেই বাহরাইন, আল খোবারের হাফ মুন বে’র এই রিসোর্ট থেকে ঠিক কোন দিকে, কতদূরে অবস্থান করছে।

এইমাত্র সৌদিদের হাতের কাছের ব্যাংকক, বাহরাইনের সুরার টানে নাকি ওইখানের সাকীদের মদির আহ্বানে উন্মাতাল মোহাম্মেদ খলিল হঠাত শিশাভংগ করে, মানে জমে উঠা শিশা আড্ডা ছেড়ে বাহরাইনের উদ্দেশ্যে প্রস্থান করলে, আরো কিছুক্ষণ যখন শিশা টানছিলাম আমরা দুজনে, তখন এই এলাকার ভূগোল বিষয়ে একটু শিক্ষা নিয়েছিলাম গিউসিকে ওস্তাদ মেনে। তাতে বুঝেছি পারশ্য উপসাগরের একাংশ অর্ধচন্দ্রাকৃতি ধারণ করে আল খোবারের এদিকটায় হাফ মুন বে নাম পেলেও, সেটিরই আরেক বাহু যেটি বাহরাইন নামের দ্বীপরাস্ট্রটিকে সৌদির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ থেকে আলাদা করেছে, সেখানটায় নাম হয়েছে তার বাহরাইন উপসাগর। ১৯৮৬ সনে সৌদি ও বাহরাইনের রাজাদের যৌথ উদ্যোগে, সেই বাহরাইন উপসাগরের উপর দিয়ে ২৫ কি মি দীর্ঘ এক সেতু তৈরি করে সৌদির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের সাথে বাহরাইনের যোগসূত্র স্থাপন করা হয়েছিল; নাম যার কিং ফাহাদ কজওয়ে। এই রিসোর্ট থেকে খুব জোর ১৫/২০ কিমি দূরত্ব সেটির। যার মানে হচ্ছে এই রাতের নির্জনতায় ৪০/৪৫ মিনিটেই পৌঁছে যাবে খলিল তার মঞ্জিলে মক্সুদে।

এছাড়া গিউসির সাথে গুলতাপ্পি মারতে মারতে আরো জানলাম যে, যতোই একটু আগে খলিল হঠাত করেই বাইরাইন যাবার সংকল্প ঘোষণা করুক না কেন, এটি অবশ্যই তার পূর্বপরিকল্পিত। কোম্পানির ট্রাভেল পলিসি মেনে আমাদের সবার যেহেতু এক ফ্লাইটে ওঠা বারণ, সেহেতু ফিল আর আমি রাত আটটার ফ্লাইটে আসলেও, গিউসি ও খলিলের আসার কথা ছিল দুপুরের ফ্লাইটে। গিউসি জানালো, দুপুরের ফ্লাইটে সে একাই এসেছে। কারণ সকালে অফিসে এসেই খলিল ঘোষণা দিয়েছিল ফ্লাইটে না গিয়ে যাবে সে নিজের গাড়ী ড্রাইভ করে, নিজ খরচে।

অতঃপর খলিলের অনুপস্থিতিতে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আড্ডা, শিশার তামাক সাঙ্গ হওয়ার সাথে সাথে ভঙ্গ হলে, নিজ ঠিকানায় ফিরে গোসল করার জন্য অতি উমদা হাম্মামখানায় ঢুকে মনে হল, আরে খলিল যদি নিজ সখ পূরণার্থে এইরাতে বাহরাইন যেতে পারে, তবে থাকি কেন এ অধম পিছিয়ে?

এইরাতে হাফ মুন বে’র পানিতে নামার ব্যাপারে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো আমার সমুদ্রে নামার সাধও, সুইমিং পুলে নেমে কিছুটা হলেও তো পূরণ করা যায়। না, রিসোর্টের বারোয়ারী সুইমিং পুলের কথা ভাবছি না। বড় আকারের ঐ রকম গনসুইমিং পুল এই রিসোর্টে আছে কি না, তাও জানি না। যে সুইমিং পুলের কথা ভাবছি, দেখেছি সেটিকে বেডরুমের বীচমুখী কাঁচের দেয়ালের ঠিক ওপাশে। বীচ ও কটেজের মাঝে অবস্থান সেটির। মিনি সুইমিংপুলের ঢঙ্গে গড়া, ছোট্ট সেই চৌবাচ্চাটি যে এই কটেজবাসীর প্রাইভেট সুইমিংপুল, সে ঘোষণাও আছে রিসোর্ট নির্দেশিকাতে। অতএব এই কটেজের বাসিন্দা হিসেবে এই প্রাইভেট সুইমিং পুলে, নিজ পছন্দের প্রাইভেট সময়ে নামতেই তো পারি! যেই ভাবা সেই কাজ। কটেজের অভিজাত হাম্মামখানার আলো আধারি থেকে ঘুরে বেরিয়ে, বেডরুমের বীচমুখী কাচের দেয়ালে গা লাগিয়ে থাকা কাঁচের দরজা খুলে, কয়েক পা হেঁটে নামলাম গিয়ে সেই বাচ্চা সুইমিংপুলটিতে।

বাহ, চমৎকার লাগছে তো! যদিও বীচের দিক থেকে আসছে উড়ে এখন ঝিরি ঝিরি হালকা শীতল হাওয়া, সারা দিনের মরুসূর্যের হলকার নীচে তেতে উঠা এই বাচ্চা সুইমিংপুলের পানি এখনো ধারণ করে আছে কুসুম কুসুম গরম ভাব। এই দুইয়ে মিলে বেশ চমৎকার একটা অনুভূতির অনুরণন পড়ছে ছড়িয়ে দেখছি সারা শরীরে।

অতএব শরীরের বেশিরভাগটাই কুসুম কুসুম পানিতে ডুবিয়ে চৌবাচ্চার সিঁড়িতে হেলান দিয়ে বসে, তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে, ছোটবেলায় চেনা সপ্তর্ষিমণ্ডল, কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডল খুঁজতে খুঁজতে, ফের যখন পড়লো চোখে আকাশে ঝুলতে থাকা রুপালি থালার মতো চকচকে চাঁদ, মনে হল ফের, আজ কি আসলেই পূর্ণিমা নাকি? পূর্ণিমাই হয় যদি, কোন পূর্ণিমা এটি তবে?

অধমের যৎসামান্য জ্ঞান বলছে, প্রাচীনকাল থেকেই আরবরা চান্দ্রবছর ব্যবহার করে আসছে; যেটি এখন হিজরি সাল নামে সারা বিশ্বের মুসলিমদের ধর্মপালনের নিমিত্তে প্রচলিত। চান্দ্রবছরই যদি আরবরা ব্যবহার করে থাকবে, তাহলে তাদের মধ্যেও তো পূর্ণিমা, অমাবস্যার বিশেষ গুরুত্ব থাকার কথা? আছে কি তা আদতে? ছিল যা প্রাচীন ভারতে এবং আছে তা এখনো আমাদের এলাকার বিশেষত সনাতন ও বৌদ্ধ ধর্মানুসারিদের কাছে। অথচ প্রাচীন ভারততো জানি পরিপূর্ণভাবে চান্দ্রবছর ব্যবহার করতো না। ছিল তো সেটি সৌর আর চন্দ্র, এই দুইয়ের মিলিত বছর। তারপরও যদি আমাদের সংস্কৃতিতে পূর্ণিমার আলাদা গুরুত্ব থেকে থাকে, এখানে তো সেটি আরো বেশী গুরুত্ব পাবার কথা। পেয়েছে কি তা এখানে?

সর সর সরর জাতের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠা একটা শব্দ এ সময় কানে যেতেই, ধড়পড় করে ঘুরে শব্দের উৎসের দিকে চোখ দিতেই টের পেলাম যে, সৌর ও চান্দ্র বছর বিষয়ক ভাবনা ভাবছিলাম চোখ বুঝে। এখন ঐ শব্দের উৎসের চোখ যেতেই, ১০/১৫ মিটার দূরের আমার কটেজেটির প্রতিবেশী ডানের কটেজের মাঝের জায়গাটায় পড়ে থাকা শুকনো পাতার উপর দিয়ে কিছু একটা বুকে হেঁটে চলে গেল বলে যে আভাস পেলাম, তাতে মনের ভেতরে থাকা তুমুল সর্পভীতি আমার এক্কেবারে মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। একই সাথে চোখের সামনে ভেসে উঠলো, নানান সময়ে দেখবো না দেখবো না করে দেখা, মরুর র‌্যাটল স্নেকের স্থিরচিত্র ও ভিডিও। ফলাফল? তড়িঘড়ি সাধের প্রাইভেট সুইমিংপুল ত্যাগ করিয়া, দ্রুত নিজ কটেজের হাম্মাম গমন!

ঠিক কী কারণে, কবে যে মনের ভেতর এই সর্পভীতি কঠিন আসন গেড়ে বসেছিল, হদিস তার আর জানি না আজ। তবে সেই অজানাক্ষণটি থেকেই আমি যে আজীবন বয়ে বেড়াচ্ছি প্রবল সর্পভীতি, তার প্রমান হিসেবে, হাম্মামখানায় চমৎকার গোসল সমাপন করে বিছনায় গা এলিয়ে দেবার আগে যে দুটো কাজ করেছিলাম, তার প্রথমটিই হলো; বিছানার বাঁয়ের বীচ সংলগ্ন দিকের কাঁচের দেয়ালের গায়ে লাগানো কাঁচের দরজাটি ঠিকঠাক মতো লাগানো হয়েছে কি না, পরখ করেছি তা পুনঃ পুনঃ; যাতে বেহুলা লক্ষিন্দরের লৌহনির্মিত বাসর ঘরে যে সুক্ষ্ম ছিদ্রপথে সুতানালি সাপ ঢুকেছিল, ঐ রকম কোন ফাঁকও না থাকে। অতপর পুরো কাঁচের দেয়ালটিকে পর্দামুক্ত করে শুয়েছিলাম রাজকীয় বিছানায়।

আহা কী চমৎকারই না হয়েছে আজকের এই ঘুমানোর ব্যবস্থাটি! বিছানায় শুয়ে থাকলেও মনে হচ্ছে আছি শুয়ে হাফ মুন বীচে। আর উপরে ঝুলতে থাকা আস্ত রুপালি চাঁদ থেকে গলে গলে পড়ছে গায়ে রুপালি জ্যোৎস্না। শুধু তাইই না। ভেসে যাচ্ছে তাতে মরুর বীচের বালির ওপাশে শুয়ে থাকা হাফ মুন বে’র একূল, অকূল, দুকূল।

কিন্তু নাহ! কবি নই যেহেতু, বেশীক্ষণ এই কাব্যভাবনা স্থায়ী হলো না। ওই ভাবনা ছেড়ে ঘাই দিয়ে উঠল মনে, আচ্ছা খলিলতো নিশ্চয়ই আরো আগেই পৌঁছে গেছে বাহরাইন। সে কি এখন তবে বসে আছে কোন পানশালায়, মদিরার গ্লাস হাতে? নাকি এরই মধ্যে সে বাহুলগ্না হয়েছে কোন সুন্দরী সাকীর? তা যদি হয়েই থাকে, কোন দেশী সেই সাকী? আরব নাকি অনারব?

তারই পিঠাপিঠি মনে পড়লো আজ বিকেলে ফিলের মুখে শোনা সৌদিপুরুষদের নারী ও যৌনভাবনা বিষয়ক সেই চুটকিটি, শুনেছিলাম যা আগেও বারকয়েক অন্যান্য অসৌদি সহকর্মীদের মুখে ,যা থেকে সৌদি সংস্কৃতির পুরুষমানসের একটা স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। আচ্ছা , ঐ ধারনাটি কি আসলেই সঠিক ভাবে ধারণ করেছে সৌদি পুরুষমানস? না কি এটি কোন অসৌদিরচিত অতিরঞ্জিত রেইসিস্ট ধারনারই বহিঃপ্রকাশ?

নাহ, সেটাই বা বলি কিভাবে? আমার নিজের অভিজ্ঞতাওতো ঐ চুটকির সত্যতাকেই প্রমাণ করে। এবার রিয়াদে আসার প্রথম সপ্তাহেই হঠাৎ করেই এক সকালে, অফিসের সৌদি পাবলিক এফেয়ার্স ম্যানেজার রোয়াইদ সাঈদ, সৌদির নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিষয়ে সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করা তরুণদের জন্য কোম্পানি যে ইন্ডাস্ট্রি অরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করেছিল তাতে ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেটিং সম্পর্কে আমাকে ঘণ্টা দেড়েকের একটা ক্লাস নেবার প্রস্তাব দিলে, প্রথমে তার এই “উঠ ছুড়ি তোর বিয়া মার্কা” প্রস্তাব মেনে নেবো না ভাবলেও, কেন জানি সেটিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সেই তরুণদের মুখোমুখি হবার পর এরকম অভিজ্ঞতাই তো হয়েছিল আমারও।

ব্যাপার হচ্ছে, একদম অপ্রস্তুত এমনকি কোন রকমের মানসিক প্রস্তুতিও ছাড়া, নিতান্তই জেদের বশবর্তী হয়ে অফিসের মিটিং রুমে উপস্থিত সেই ৩০ সৌদি তরুণ ফার্মাসিস্টের মুখোমুখি হয়ে নিজের পরিচয় দিতে দিতে সেদিন ভাবছিলাম যখন, কী করে শুরু করি বিপণন আলোচনা, ঠিক তখনি সবার সামনে থাকা স্লিপ প্যাড ও কলম দেখে আইডিয়াটি খেলে গিয়েছিল মাথায়।

তো সে মোতাবেক মিটিং রুমে ইউ শেইপে আমাকে ঘিরে থাকা সাদা তোবের বদলে জিন্সের সাথে রং বেরঙের টি শার্ট, পোলো শার্ট পরা একদমই অকৌতুহলি চেহারার সেই তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেছিলাম, আচ্ছা আপনারা যেহেতু ফার্মেসি পড়েছেন, তা হলে ধরেই নিতে পারি যে আপনারা অবশ্যই বেশ কিছু ফারমাসিউটিক্যালস ব্র্যান্ডের নাম জানেন। তা হলে চলুন একটা খেলা খেলি আমরা। খেলার নিয়ম খুব সোজা। আপানারা আপনাদের সামনে রাখা স্লিপপ্যাডে যে কটা ফার্মাসিউটিক্যালস ব্র্যান্ডের নাম মনে আসবে, তা লিখবেন দ্রুত। সময় ৩০ সেকেন্ড। দেখি কে জেতে? এন্ড ইয়োর টাইম স্টার্টস নাউ! অতঃপর সুদীর্ঘ সেই ৩০ সেকেন্ড পর, যখন এক এক করে সকলের কাছ থেকে যার যার স্লিপ হাতে এলো, দেখলাম তাতে কেউই একটার বেশী ব্র্যান্ডের নাম লিখতে পারেনি। তবে সবচেয়ে মজার ঘটনা ছিল যে তার মধ্যে ২৮ জনই লিখেছিল একটাই ব্র্যান্ড, “ভায়াগ্রা”! বাকি দুজনের একজন একটি প্যারাসিটামলের নাম, অন্যজন অতিপ্রচলিত একটি অ্যান্টিবায়োটিকের নাম লিখেছিল!

এভাবে আটাশ সৌদি তরুণকে “ভায়াগ্রা” লিখতে দেখে সাথে সাথেই মনের পর্দায় সেসময় ভেসে উঠেছিল বহুকাল আগে চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে অহরহই দেখা এক হকারের চেহারা, যে নাকি তার শ্লিল অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি মিলিয়ে ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দিচ্ছে অব্যর্থ বয়ান “বা’জি, ষান্ডার তৈল ডান্ডাত মাখি, খাম্বাত বাড়ি দিবেন তো এক্কোবারে ডং করি উইটবো।”

ভাবছিলাম আরো, আচ্ছা ঐ হকার যদি কথিত ঐ ষান্ডার তৈল সৌদিতে বিক্রি করার সুযোগ পায় এবং সে যদি তার ঐ বাক্যটিকে সার্থকভাবে আরবিতে অনুবাদ করে, করতে পারে ঐরকম অব্যর্থ বয়ান, তবে রিয়ালে রিয়ালে ভাগ্য তার ফিরে যেতে কতোক্ষণ?

সে যাক, আমাকে ঘিরে বসে থাকা তুমুল সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি তরুণদের এই ভায়গ্রাপ্রীতিকে আমাদের দেশের কারো কারো ষান্ডার তৈল প্রীতির সমার্থক বলে (কারণ ভায়গ্রা ট্যাবলেট একই কাজ করে বলে ক্লিনিকালি প্রমাণিত) প্রথমে কিছুটা হকচকিয়ে গেলেও, সাথে সাথেই সামলে বলেছিলাম মাই ফ্রেন্ডস ইউ নো, দিস ইজ হোয়াট ইজ কলড পাওয়ার অব মার্কেটিং। অল মোস্ট অল অব ইউ নো দ্য নেইম অফ দ্য প্রডাক্ট হুইচ ইউ ইভেন ডোন্ট নিড, নাউ। এরপর আর থামতে বা ভাবতে হয়নি অধমকে। দেড়ঘণ্টার বদলে ঝাড়া দুইঘণ্টা ফার্মা মার্কেটিং নিয়ে বকাবাদ্য করে মহা আনন্দিত ও উদ্বেলিত সেই তরুণদের সাথে লাঞ্চ করে, রুমে ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম আচ্ছা সৌদি তরুণদের তুমুল এই ভায়গ্রাপ্রীতি কি তাহলে সৌদিসংস্কৃতিতে পুষ্ট হওয়া সামগ্রিক পুরুষ মননের বহিঃপ্রকাশই নাকি? হ্যাঁ এ বিষয়ে সেদিন কোন স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে না পারলেও এতো দিনে নানান সময়ে যতোটুকুই শুনেছি, জেনেছি ও দেখেছি, তাতে ঐ চুটকির অন্তর্নিহিত বক্তব্যকে আর মোটেও উড়িয়ে দিতে পারছি না এখন।

লেখক : ভ্রমণসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানব জীবনে প্রতিযোগিতার চেয়ে সহযোগিতার গুরুত্ব বেশি
পরবর্তী নিবন্ধসমকালের দর্পণ