প্রশাসনের শোক প্রত্যাখ্যান করে ধর্মঘট, একাডেমিক ভবনে তালা

ঢাবি ছাত্র সাম্য খুন

| শুক্রবার , ১৬ মে, ২০২৫ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের মৃত্যুতে প্রশাসনের ঘোষিত অর্ধবেলা শোক প্রত্যাখান করে পূর্ণদিবস ক্লাসপরীক্ষা বর্জন ও ধর্মঘট পালন করেছেন একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে কর্মসূচিতে। আন্দোলনরতরা এদিন কোনো ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার এবং সকল প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিও জানান তারা। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা, কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনে তালা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ ও প্রশাসনিক ভবনেও তালা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও মাস্টার দা সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবিদ উর রহমান মিশু বলেন, আমাদের দাবি দুটি। ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস। একইসাথে সাম্যকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মঘট শেষে বিকাল ৫টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলেও তিনি জানান।

এদিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে সাম্যের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় সংগঠনটি। দুপুর ১টার পর তাদের কর্মসূচি শেষ হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও সংগঠনটির মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। ‘আমাদের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যম্পাস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘ফাঁসি ফাঁসি চাই, হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’, ‘সাম্য ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেত দেব না’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করেসহ নানা ধরনের স্লোগান দেন তারা।

এ সময় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমাদের আজকের এ কর্মসূচি নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিটি করপোরেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা আজকে দাবি জানাচ্ছি, আগামী দিনে কোনো শিক্ষার্থী যেন এরকম অনাকাঙ্‌ক্িষত ঘটনার শিকার না হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসার সময় মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ছুরিকাঘাতে আহত হন সাম্য (২৫)। রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাম্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পড়তেন। ২০১৮১৯ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন ঘোষণা