তীব্র গরম আর প্রকৃতির উত্তাপে এক টুকরো প্রশান্তি যেন ওই মেঘের ভেলার নিচে আকাশ ছুঁই ছুঁই কৃষ্ণচূড়া। প্রকৃতির অনন্য এক উপহার যেন এই কৃষ্ণচূড়া। এর চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য এখন মীরসরাই উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন সড়ক, স্কুলের আঙিনা ও জনপদজুড়ে। মীরসরাই উপজেলা সদরে ভূমি অফিসের সম্মুখের কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ যেন দিগন্তজোড়া আগুনরাঙা ফুলে সেজেছে চারপাশ। প্রচণ্ড দাবদাহেও স্থানীয় বাসিন্দারা এই রঙিন প্রকৃতির মাঝে খুঁজে নিচ্ছেন স্বস্তি ও প্রশান্তি। গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। মধ্যাহ্নের সূর্য যেন ঝলসে দিচ্ছে জনজীবন। এরই মাঝে উপজেলার মীরসরাই সদর, জোরারগঞ্জ, বারইয়ারহাট, খৈয়াছড়া ও বড়তাকিয়া এলাকায় রাস্তার ধারে ও খোলা মাঠের কিনারে কৃষ্ণচূড়ার লাল–কমলার ছটা মন কেড়ে নিচ্ছে পথচারীদের।
মীরসরাই উপজেলা ভূমি অফিস ঘুরে দেখা যায়, পুরো অফিস ভবনের চারপাশজুড়ে ছড়িয়ে আছে কৃষ্ণচূড়া গাছ। লাল–কমলা ফুলে আচ্ছাদিত এসব গাছ অফিসপাড়ার পরিবেশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। অফিসের আশেপাশের পথচারীরা ও সেবাগ্রহীতারাও এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন। ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সুনিল চন্দ্র দাশ বলেন, ভীষণ গরম পড়ছে, বাইরে বের হলেই হাঁসফাঁস লাগে। কিন্তু কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাঁড়ালে চোখে আর মনে ঠাণ্ডা লাগে। প্রকৃতির এই রঙ আমাদের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।
এছাড়া উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পের প্রবেশ পথেও দেখা মিলেছে একটি বিশালাকৃতির কৃষ্ণচূড়া গাছ। আনসার ক্যাম্প চত্বরে প্রবেশের সময়ই চোখে পড়ে এই দৃষ্টিনন্দন গাছটি। গ্রীষ্মের রোদ ঝলমল দুপুরেও গাছটির ঘন ছায়া ও লাল–কমলা ফুল স্থানীয়দের নজর কাড়ছে। মীরসরাই কলেজ পড়ুয়া কয়েকজন ছাত্র জানায়, প্রতিদিন ক্লাস শেষে আমরা বন্ধুরা মিলে কৃষ্ণচূড়ার নিচে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি, ছবি তুলি। গরম হলেও এই ফুল দেখে মনটা ভালো হয়ে যায়। স্থানীয় ব্যাবসায়ী সৈকত চৌধুরী জানান, প্রতি বছর এই সময়টায় কৃষ্ণচূড়ার রঙে মীরসরাই অন্য রকম সুন্দর হয়ে ওঠে। শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক আবেগেরও অংশ।মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও প্রকৃতির এই রঙিনতা সাধারণ মানুষকে কিছুটা নির্মল সুন্দরের স্বস্তি দেয়। তাই এই কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য সংরক্ষণে সবারই উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আমরা এর রোপন ও প্রসারেও আগামীতে ভূমিকা নিবো।