জীবনের চালচিত্র

সত্যব্রত বড়ুয়া | সোমবার , ৫ মে, ২০২৫ at ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

জেলখানার এক জেলারের সাথে আমার পরিচয়ের সুবাদে একবার জেলখানার ভেতরে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের জীবনযাত্রা দেখবার সুযোগ ঘটেছিল। দেখলাম কেউ ফুলের বাগানে পানি ঢালছে, কেউ দিচ্ছে টবের লেবুর গাছে সার। যারা শিক্ষিত তাদের মধ্যে কেউ কেউ হিসাবপত্র লিখছে। একজনকে শুধু দেখলাম একটা কুকুরের লেজকে সোজা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে। সোজা হয়, আবার বাঁকা হয়। আমার দিকে তাকিয়ে লোকটা হেসে বললো আমার নাম রুস্তম আলী খুনি। সবাই জানে আমি একজন ভয়ঙ্কর খুনি। এই কুকুরের লেজটা সোজা করবার কাজটা না পেলে এই বাগানে যারা কাজ করছে তাদেরই হয়তো এক সময় আমি খুন করে ফেলতাম। রুস্তম আলী খুনি ছিল যাবজ্জীবন দন্ডিত কয়েদি। পরে শুনেছি তার কাজের প্রতি নিষ্ঠার কারণে জেলার সাহেবের সুপারিশে তার সাজা ৩ বছর কমে হয়েছিল ১০ বছর। আমি একবার তার নিশ্চিত পুরের গ্রামের বাড়িতে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তার বয়স এখন প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই। শরীরটা মজবুতই রয়েছে। দেখলাম নাতি পতিদের সাথে একটা কুকুরের লেজ সোজা করতে। এই লেজগুলো রাবারের। জেলার সাহেব জেলখানা হতে মুক্তির সময় দিয়েছিলেন। রুস্তম আলী খুনির বাড়িটি কুকুরের লেজের কারণে কুখ্যাত না হয়ে হয়েছে বিখ্যাত।

সমুদ্রের চাইতে নাকি গভীর হলো পেট। ওটা যতই ভরবেন ততই বড় হবে। কমাতে চাইলে সমুদ্রের গভীরতা হবে ডোবার মতো। ঘুষও অনেকটা সে রকমই। ঘুষকে কখনো প্রতারণা করা বলা যাবেনা। আমরা অনেক সময় নিজেরাই ঘুষের রেটটা একটু বাড়িয়ে দেই কাজটা যাতে একটু তাড়াতাড়ি হয়। এটাকে কখনো চুরি করাও বলা যাবে না। এক সময় বন খেকোদের কথা খুব শুনেছি। শুনেছি এসিড সন্ত্রাস, ইভটি/ৎটিং এর কথাও। এখন অহরহ শুনছি ধর্ষণের কথা। শিশু ধর্ষণ কথাটা ভাবা যায় কী?

কি আর করি। একতারা হাতে লালন সংগীত গাইতে ইচ্ছে করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশেদ রউফ – এর অন্ত্যমিল
পরবর্তী নিবন্ধসুখের দেশ ভুটান