মীরসরাই উপজেলার ৯ নম্বর মীরসরাই সদর ইউনিয়নের একটি ব্রিজের মাঝের অংশ ধসে পড়েছে। এছাড়া ভেঙে গেছে রেলিং, বের হয়ে এসেছে রড। কিন্তু ভেঙে পড়ার ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি ব্রিজটি। এ ভাঙা ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করছেন ওই গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মীরসরাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রিজটি নির্মাণ হয় অন্তত ৫০ বছর আগে। ১০ বছর আগে ২০১৫ সালে ব্রিজটিতে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। এরপর যতই দিন যাচ্ছে ততই নাজুক হয়ে পড়ছে। ব্রিজের উপরের দুটি অংশে ভেঙে পড়েছে। ফাটল ধরেছে পিলারে। এছাড়া ভেঙে গেছে দুই পাশের রেলিং। অথচ ব্রিজ দিয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী চলাচল করে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এতে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানির মত ঘটনাও।
স্থানীয় সাজেদিয়া নুরানী ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আতাউল্লাহ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৩ শতাধিক ছাত্র–ছাত্রী রয়েছে। আড়াই শতাধিক কোমলমতি শিশু প্রতিদিন এ ব্রিজ ব্যবহার করে। আমরা সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকি।
শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা নাইমুল হুদা বলেন, মীরসরাই উপজেলার বড় বাজারগুলোর মধ্যে একটি মিঠাছরা বাজার। এ ব্রিজ হয়ে কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে বাজারে তাদের পণ্য আনা–নেয়া করে থাকেন। বর্তমানে ব্রিজটি দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য। ব্যবসায়ী নুর সোবহান বাদশা বলেন, প্রতিনিয়তই এ ব্রিজে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তাই দ্রুত ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণ জরুরি।
ওই সড়কে চলাচল করা সিএনজি টেক্সি চালক মীর হোসেন বলেন, এ সড়কে নিয়মিত যাত্রী আনা নেওয়া করতাম। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, যাত্রীদেরও কষ্ট বেড়ে গেছে। কৃষক আব্দুল হাই বলেন, প্রায় ৫০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ২০১৫ সালের দিকে ব্রিজটির ওপরের অংশের আস্তরণ খসে পড়া শুরু হয়।
মিঠাছরা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ব্রিজ ব্যবহার করে আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। দীর্ঘকাল ধরে এ অবস্থার ফলে আমরাও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভয়ে থাকি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকরাও ভয়ের মধ্যে থাকেন। এ অবস্থা থেকে দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয়ে এলজিইডির মীরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, ব্রিজটি সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। সম্প্রতি আমি ব্রিজটি সম্পর্কে জেনেছি। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।