ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ৪ মে, ২০২৫ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল পাকিস্তান। ইসলামাবাদ দাবি করছে, তারা ৪৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। গতকাল শনিবার আব্দালি উইপন সিস্টেম নামের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘ইন্ডাস’ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে উৎক্ষেপণ করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ। এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এটিকে ভারত ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে দেখছে।

এদিকে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এবার পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও জননীতির স্বার্থে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত সরকার। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে উৎপাদিত বা সেখান থেকে রপ্তানির সব ধরনের পণ্যের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাংশের মতে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি খুব বেশি পণ্য ভারতে আসে না। তবে ঘুরপথে দুবাই হয়ে কিছু পণ্য ভারতে আসত। বিশেষত, পোশাক, মশলা বা ছোট যন্ত্রাংশের মতো কিছু পণ্য ঘুরপথে ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করত। তাও খুব বেশি নয়। কারও কারও মতে, ঘুরপথেও যাতে কোনও পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ না করে, তা নিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। পাকিস্তানি পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ শিপিং’এর তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের পতাকা থাকা কোনও জাহাজ ভারতীয় বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। একই রকম ভাবে কোনও ভারতীয় জাহাজও পাকিস্তানের কোনও বন্দরে যাবে না। অপরদিকে পাকিস্তানের সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য ছিল সেনাদের প্রস্তুতি যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত নেভিগেশন ও গতিশীলতা সক্ষমতা নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সামরিক নেতারা এই প্রযুক্তি ও বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন। পেহেলগাম হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে আসছে দিল্লি। তবে পাকিস্তান বলে আসছে, ওই অভিযোগের কোনো প্রমাণ ভারত এখনো দেখাতে পারেনি। ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানিদের দেওয়া ভিসা বাতিল করেছে এবং ওয়াঘাআটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। জবাবে পাকিস্তান সরকার ভারতের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে শিমলা চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছে। সাধারণ ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সীমান্তের প্রধান প্রবেশপথটি বন্ধ করে দিয়েছে। দুই দেশই নিজেদের আকাশে অন্য দেশের বিমান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশের সেনাদের গোলাগুলির খবরও প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তার পরদিনই পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আরো একটি যুদ্ধ লাগার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় ঐকমত্য তৈরির মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করাই লক্ষ্য
পরবর্তী নিবন্ধফেরি ঘিরে অনেক পরিবর্তন, সারা বছর চালু রাখাই চ্যালেঞ্জ