পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে পিএইচপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নামও রয়েছে। গত বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন এম এ হাশেম রাজু নামে এক ব্যক্তি। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের বাংলাদেশ বিষয়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহসভাপতি।
আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলার নথিতে দেখা যায়, আসামিদের মধ্যে অভিনেতা–অভিনেত্রী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বেশ কয়েকজন অধ্যাপককেও আসামি করা হয়েছে। অভিনেতা–অভিনেত্রীরা হলেন মামুনুর রশীদ, চঞ্চল চৌধুরী, রিয়াজ, ফেরদৌস, আশনা হাবীব ভাবনা, সাজু খাদেম, জায়েদ খান, রোকেয়া প্রাচী, মেহের আফরোজ শাওন, অরুনা বিশ্বাস, জ্যোতিকা জ্যোতি, শামীমা তুষ্টি, শমী কায়সার ও সোহানা সাবা। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাহাউদ্দীন নাসিম, আনিসুল হক, ডা. দীপু মণি, মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ওয়াসিকা আয়শা খান, মো. এ আরাফাত, সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ, আব্দুস ছালাম, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান মিতা, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নদভী, আশেক উল্লাহ, মোস্তাফিজুর রহমান, দিদারুল আলম দিদার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক আবেদ খান, সমকালের সাবেক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক নঈম নিজাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান মোজাম্মেল হক, সাংবাদিক মুন্নি সাহা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক মিথিলা ফারজানা, মাসুদা ভাট্টি, ফারজানা রুপা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আক্তারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হারুন অর রশীদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম ওয়াহিদুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও নগরবিদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. অুনপম সেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম, অধ্যাপক মিহির লাল সাহা এবং অধ্যাপক ও লেখক জাফর ইকবালও রয়েছেন আসামির তালিকায়। এছাড়া আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ঢাকা ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার, গণজাগরণ মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সাবেক জেলা জজ হেলাল চৌধুরীকে মামলায় আসামি করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ে শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল পরীবাগের সামনে আসে। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্য সন্ত্রাসীরা মিছিল অবরোধ করে। তখন ছাত্র–জনতাকে হত্যা করার জন্য গুলি বর্ষণ করে। তখন মিছিলে অংশ নেওয়া মাদ্রাসা ছাত্র সাইফুদ্দিনের চোখে গুলি লাগে।