নগরীর অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুুপুরে হাসপাতালের মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ও অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ওয়াহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে টিকাদান বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. আকরাম হোসাইন, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মুজিবুল হক, গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দিল আনজিজ এবং পেডিয়াট্রিক হেমাটো অনকোলজি ও পেডিয়াট্রিক বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেলাল উদ্দিন, ডেপুটি চিফ অব মেডিক্যাল সার্ভিসেস ডা. ফজল–ই–আকবর চৌধুরী, অ্যানেস্থেসিয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. মাসুদ আহমেদ এবং কার্ডিয়াক সার্জারির বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জিয়াউর রহমান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সময় মতো টিকা দিলে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। যেসব রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডিপথেরিয়া, হাম, কাশি, পোলিও, ধনুষ্টংকার এবং কোভিড–১৯। টিকা নিয়ে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আমাদের দেশে এক সময় প্রতি হাজারে একশ জন শিশু মারা যেতেন। শুধুমাত্র টিকা দেয়ার কারণে শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। সরকারের সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকার বাইরেও এখন অনেক সচেতন অভিভাবক বেসরকারি টিকাও তাদের শিশুদের দিচ্ছেন। আমরা টিকা দেয়ার মাধ্যমে কোভিড মোকাবেলা করেছি। এখনো কোভিড আছে, তবে টিকা দেয়ার কারণে সেটি এখন আগের মতো শক্তিশালী অবস্থায় নেই। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুর সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর। আমাদের প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে ৬৬ বছর এবং পাকিস্তানে সেটি ৬৪ বছর। এর অন্যতম কারণ হলো–আমরা মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার অনেক কমাতে পেরেছি। এটি আমাদের দেশের চিকিৎসকদের সফলতা বলতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, টিকাদান করলে কোনো ক্ষতি হয় না, এটি আমাদের সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। এখনো টিকাদান নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি রয়েছে। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে, যারা কভিডের সময় টিকা দেননি। কিছুদিন আগেও আমাদের দেশে কিশোরীদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) টিকা নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে। এসব গুজব থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সবার বুঝতে হবে যেকোনো টিকা দেয়া হয়, রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য। তাই আমাদের এই বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।