ঢাকায় একদল যুবকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান, যিনি সিদ্দিক নামেই বেশি পরিচিত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে জনতা তাকে কাকরাইল এলাকা থেকে ধরে রমনা থানায় সোপর্দ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এই অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম। রাত ১০টার দিকে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তাকে গুলশান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গুলশান থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (আজ) তাকে আদালতে পাঠানো হবে, বলেন ওসি। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়েছে ফেসবুকে, যাতে ফুটপাত দিয়ে চলন্ত অভিনেতাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে মারধর করতে দেখা যায়। এরপর জামা ছেঁড়া অবস্থায় তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় কয়েক যুবক। পাশেই পুলিশ সদস্যরা থাকলেও শুরুতে এগিয়ে আসেননি। মারধরের এক পর্যায়ে কয়েকজন পুলিশকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মাসুদ আলম, সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ওসি গোলাম ফারুককে ফোন করা হলে তারা সাড়া দেননি। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রমনা থানার ডিউটি অফিসার এসআই জালাল উদ্দিন বলেন, ঘণ্টা খানেক আগে জনতা অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানকে থানায় দিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এখন তাকে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় সিদ্দিকের বাসা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ঘটনার সময় অভিনেতা সিদ্দিক বাসায় অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে ওই বাসার সামনে অবস্থান করেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তখন স্বজনদের সহযোগিতায় একটি গাড়িতে করে পালিয়ে যান তিনি। পরে অভিনেতার এক স্বজনকে মারধর করা হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–১৭ আসন থেকে জয়ী হন প্রয়াত চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা হলে উপ–নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সিদ্দিক। পরে নৌকা প্রতীকে সেখানে মোহাম্মদ আলী আরাফাত নির্বাচিত হন।
সেবার ভোটের টিকেট না পেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে ‘মন ভালো করতে’ দুবাই বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে আলোচনায় আসেন অভিনেতা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ওই আসনের পাশাপাশি জন্মভূমি টাঙ্গাইল–১ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি।