চট্টগ্রামের অন্যতম প্রকাশনী সংস্থা শৈলী প্রকাশন। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রকাশন থেকে এ পর্যন্ত ৭০০–৮০০ জন লেখকের প্রায় ২০০০ বই প্রকাশিত হয়েছে। গত ২২শে এপ্রিল চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ২০২৫ সালের বইমেলায় প্রকাশিত শৈলীর কয়েকটি বই নিয়ে আয়োজন করা হয় লেখক পাঠক উৎসব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম. এ. মালেক। বিকেল ৪.৩০ মিনিটে তিন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ ডঃ আনোয়ারা আলম, অধ্যক্ষ রীতা দত্ত ও অধ্যক্ষ তরুণ কান্তি বড়ুয়া বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ছিল লেখকদের কথামালা, আবৃত্তি, ছড়া–কবিতা পাঠ, নতুন বইয়ের প্রদর্শন, পরিচিতিমূলক আলোচনা এবং তালিকাভুক্ত লেখককে বই উপহার প্রদান। পুরো অনুষ্ঠানকে তিনটি পর্বে সাজানো হয়। তিন পর্বে সভাপতি ছিলেন তিন ব্যক্তিত্ব তাঁরা হলেন – অধ্যাপক ডঃ মো: আবুল কাসেম, অধ্যাপক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা এবং আমিনুর রশীদ কাদেরী। উঠোন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্যরা সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন কবি ও শিশুসাহিত্যিক শৈলী প্রকাশনের উপদেষ্টা রাশেদ রউফ। উৎসবের সদস্য সচিব বায়েজিদ মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ মাজহারুল হক বলেন, শৈলী এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক স্লোগান পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ জহির, শিক্ষা সংগঠক প্রাবন্ধিক মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, প্রাবন্ধিক নেছার আহমদ, প্রাবন্ধিক রেজাউল করিম স্বপন, কথাসাহিত্যিক দীলদাজ রহমান, কবি মাহফুল আখতার। অনুষ্ঠনে অধ্যক্ষ তরুন কান্তি বড়ুয়ার ৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অধ্যক্ষ রীতা দত্ত বলেন, লেখককে মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখতে হবে। অধ্যক্ষ ডঃ আনোয়ারা আলম বলেন, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের সাথে শৈলী জড়িয়ে আছে। আজকের উৎসব অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। অধ্যক্ষ তরুণ কান্তি বড়ুয়া উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও শৈলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সভাপতি অধ্যাপক ডঃ মো: আবুল কাসেম বলেন, আমাদেরকে শিক্ষিত মানুষ তৈরী করতে হবে। ২০২৫ সালে প্রকাশিত বইয়ের পরিচিতি ও আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, অধ্যাপক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা। যাঁদের বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁরা হলেন– ডঃ মো: আবুল কাসেম, ডঃ আনোয়ারা আলম, তরুণ কান্তি বড়ুয়া, এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা, দীপক বড়ুয়া, নাসের রহমান, ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরী, শঙ্কর প্রসাদ দে, আকাশ আহমেদ, এম. নাসিরুল হক, কাসেম আলী রানা, রুনা তাসমিনা, নুসরাত সুলতানা, মোয়াজেম হোসেন, কাজী জাহাঙ্গীর, সুবর্ণা দাশ মুনমুন, কানিজ ফাতিমা, জি. এম. জহিরউদ্দীন, হেলাল চৌধুরী, সিমলা চৌধুরী, মুকুল চৌধুরী, মারজিয়া খানম সিদ্দিকা, মাহবুবা চৌধুরী, ফারহানা ইসলাম রুহী, সৈয়দ জিয়াউদ্দীন, লিপি বড়ুয়া, তারিফা হায়দার, প্রতিমা দাশ, কুতুবউদ্দীন বখতেয়ার, নাটু বিকাশ বড়ুয়া, শিরিন আফরোজ, মির্জা মোহাম্মদ আলী, রায়হানা হাসিব, জায়তুননেসা জেবু এবং রুদ্র আজাদ। প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ড. শ্যামল কান্তি দত্ত ও অধ্যাপক সনজীব বড়ুয়া। প্রকাশিত বইয়ের লেখকেরা তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। মিলনায়তনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। অনেককে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা যায়। ছড়া, কবিতা পাঠ, কথামালা ও আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরী, ইকবাল হায়দার, অধ্যাপক বাসুদেব খাস্তগীর, মিজানুর রহমান শামীম, জসিম উদ্দিন খান, আজিজ রাহমান, অধ্যাপক মৃণালিনী চক্রবর্ত্তী, রোকেয়া হক, ওবায়দুল সমীর, লিপি তালুকদার, ড. সৌরভ সাখাওয়াত, পূর্বা চৌধুরী সুইটি, প্রদীপ ভট্টাচার্র্য্য, সঞ্চিতা তালুকদার, কাসেম আলী রানা, কিশোয়ার জাহান, গোফরান উদ্দীন টিটু, সৈয়দা সেলিমা আকতার, প্রদ্যোত কুমার বড়ুয়া, মর্জিনা আখতার, কৌশিক রেইন, নুরুল কবির করিমি, শওকত আলী সুজন, নিজামুল ইসলাম সরফী, সৌভিক চৌধুরী, শরণাংকর বড়ুয়া, অধ্যাপক পিংকু দাশ, হৈমন্তী তালুকদার, রিফাত ফাতিমা তানসি, সরিৎ চৌধুরী, নবারুণ বড়ুয়া, শামীম ফাতেমা মুন্নী, আলমগীর হোসেন, শিপ্রা দাশ, আনিস শাহারিয়ার, বনানী শেখর রুদ্র, নিগার সুলতানা, সুস্মিতা তালুকদার মিতুল, সুপর্ণা লিপি বড়ুয়া, তানজিনা রাহী, সুমি দাশ, ইসমাইল জসিম, অধ্যাপক কাঞ্চনা চক্রবর্ত্তী, কুমুদিনী কলি, সালাম সৌরভ প্রমুখ। প্রধান অতিথি জনাব এম. এ. মালেক বলেন– লেখকদের সব বিষয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়, যতই পড়বেন ততই জানবেন। জ্ঞানের কোন শেষ নেই।
দৈনিক আজাদী সব সময় নতুন লেখকদের উদ্বুদ্ধ করবে এবং তাদের পাশে থাকবে। শেষ পর্যন্ত তাঁর উপস্থিতি আমাদের সকলকে আনন্দ দিয়েছে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শৈলীর কর্ণধার ও বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমু। সমবেত কণ্ঠে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের “মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্যাম”– গানটি পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।