দুকড়িবালা দেবী : স্বাধীনতা সংগ্রামী এক মহীয়সী নারী

| সোমবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ at ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

দুকড়িবালা দেবী (১৮৮৭১৯৭০)। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নারী বিপ্লবী। যিনি বিপ্লবী দলে ‘মাসীমা’ নামে পরিচিত ছিলেন। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম দিকের নারী বিপ্লবীদের মধ্যে অন্যতম। ব্রিটিশ শাসক দ্বারা তিনিই প্রথম সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেন। দুকড়িবালা দেবীর জন্ম বীরভূম জেলার নলহাটি থানার ঝাউপাড়া। তার পিতা ছিলেন নীলমণি চট্টোপাধ্যায় এবং মা কমলকামিনী দেবী। স্বামীর নাম ফনিভূষণ চক্রবর্তী। দুকড়িবালা দেবীর বোনপো নিবারণ ঘটক ছিলেন সশস্ত্র বিপ্লববাদী। মাসিমা দুকড়িবালা নিবারণ ঘটককে খুব স্নেহ করতেন। বোনপো প্রায়ই তার বাড়িতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসতেন। স্বদেশী বই বা বেআইনি বই লুকিয়ে পড়ার স্থান ছিল মাসিমার বাড়ি। এইসব দেখে দুকড়িবালা দেবীর কেমন সন্দেহ হতো। তিনি সকলের আড়ালে বইগুলি দেখেন এবং পড়েন। নিবারণ ঘটকের প্রভাবে দুকড়িবালা দেশের কাজে এগিয়ে আসেন। সেই থেকে তিনি বিপ্লবী দলে মাসীমানামে পরিচিত হন। ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় বিপ্লবী বিপিনবিহারী গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রডা কোম্পানীর মাউজার পিস্তল ও তার কার্তুজের ৫০ টি বাক্স লুট হয়। তার কিছু আসে নিবারণ ঘটকের কাছে, তার দেওয়া সাতখানি মাউজার পিস্তল ও কার্তুজ নিজের হেফাজতে লুকিয়ে রাখেন দুকড়িবালা। পুলিশ খবর পেয়ে ৮ জানুয়ারি ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে তার বাড়ি তল্লাশি চালায় এবং দুকড়িবালা দেবী গ্রেপ্তার হন। কোলের শিশুকে ছেড়ে তাকে জেলে যেতে হয়। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে ডিসেম্বর মাসে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। উল্লেখ্য, দুকড়িবালা দেবীই পরাধীন ভারতে অস্ত্র আইনে দণ্ডিতা প্রথম মহিলা। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ শে এপ্রিল দুকড়িবালা দেবী মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পাচ্ছেন সিএমপি কমিশনার