পারিবারিকভাবেই তারা বলী

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

জব্বারের বলী খেলা যারা নিয়মিত দেখেন তাদের কাছে একটি দৃশ্য সব সময় পরিচিত। তা হচ্ছে দুজন বৃদ্ধ রিং এর মাঝে লড়াই করছেন। অন্তত গত বিশ বছর ধরে তেমন দৃশ্য দেখে আসছে সবাই। যদিও এই দুজনের বলী ধরার বয়স ৫২ বছর। এদের একজন হাটহাজারীর মফিজ আর অন্যজন পতেঙ্গার খাজা আহমেদ। এই দুজন দুই বছর আগে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তারা আসছেন। গতকাল খাজা আহমেদ জানালেন আয়োজক কমিটি তাদের নিয়ে আসে। এ দুজন যেন জব্বারের বলী খেলার আইকন। যদিও কমিটি দুজনকেই বিজয়ী ঘোষণা করে। গতকাল পতেঙ্গার খাজা আহমেদ এসেছিলেন তার দুই সন্তান নিয়ে। এদের একজন সেলিম বাদশা আর অন্যজন কাইয়ুম। সেই ছোট বয়স থেকেই বাবার সাথে জব্বারের বলী খেলায় আসতেন সেলিম বাদশা। আর বাবাকে দেখতে দেখতে তিনি নিজেও বলী হয়ে গেলেন। ২০১২ সাল থেকে সেলিম বাদশা খেলছেন জব্বারের বলী খেলায়। প্রতিবারই প্রথম রাউন্ড জিতেছেন। কিন্তু কোনোবারই চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে খেলতে পারেননি। আর সেটাই তার মনে যেন ক্ষত হয়ে বিঁধছে। খাজা আহমদের আরেক ছেলে কাইয়ুম। বয়স এখনো ত্রিশের বেশি হয়নি। গত আসর থেকে কাইয়ুমও খেলছেন জব্বারের বলী খেলায়। তবে তিনি জিততে পারেননি।

খাজা আহমদ জানালেন সেই ৭৪ সাল থেকে অংশ নেওয়া বলী খেলার আসরের নানা স্মৃতির কথা। তার বর্তমান বয়স এখন ৭৩। তার মনে পড়ছে তখনকার লালদীঘি ময়দান কেমন ছিল। কোথায় গাছে বসে মানুষ খেলা দেখতো। পুরোনো কথা বলতে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে গেলেন খাজা আহমেদ। তবে নিজে কখনো জব্বারের বলী খেলার শিরোপা জিততে না পারলেও তার ছেলেরা একদিন সে স্বপ্ন পূরণ করবে তেমনটাই বিশ্বাস করেন। ছেলেদের মাঝেও বলী খেলা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাস দেখা গেল। সেলিম বাদশা বললেন বাবাকে দেখে তিনি বলী হয়েছেন। আর সেটা চালিয়ে নিয়ে যেতে চান। একদিন জব্বারের বলী খেলার সেরা হতে চান। কাইয়ুমের বয়স কেবল শুরু। মাত্র দু আসরে খেললেন। তবে তারও স্বপ্ন একদিন চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করবেন। তবে সে জন্য যে তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে আর পরীক্ষা দিতে সেটা বেশ ভালই বুঝেন দুজনই। নিজেদের ক্রমশঃ প্রস্তুত করতে চান সেলিম এবং কাইয়ুম। হয়তো কোনো একদিন খাজা আহমেদের স্বপ্ন পূরণ হবে তার দুই সন্তানের হাত ধরে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৬৭ একর ভূমি নিয়ে জটিলতা
পরবর্তী নিবন্ধগলা কেটে হত্যার পর পালিয়েছে স্বামী