মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে

চট্টগ্রাম বন্দর ও জাইকার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা সাখাওয়াত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ at ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণে জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকার সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) . এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটি কেবল একটি অবকাঠামো প্রকল্প নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত বিনিয়োগ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকার একটি হোটেলে জাইকা ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, মাতারবাড়ি বন্দর চালু হলে বড় জাহাজের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে (প্রায় ১ লক্ষ ডিডব্লিউটি পর্যন্ত), বিদ্যমান বন্দরগুলোতে যানজট হ্রাস পাবে, সরবরাহ শৃঙ্খলা আরও গতিশীল হবে এবং কক্সবাজারমহেশখালীর নতুন শিল্পাঞ্চলে সরাসরি প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হবে। এতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাবে পরিণত হবে।

প্যাকেজ ১ কার্যক্রমের আওতায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস বার্থ ও জেটি নির্মাণ করা হবে। এতে ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ বার্থিং নিতে পারবে। এতে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেনার বার্থে ৩৫০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ ভিড়তে পারবে। এছাড়া টার্মিনাল, ভবন, পেভমেন্ট, রিটেইনিং ওয়াল, সি ওয়াল, সীমানা প্রাচীর, ভূমি উন্নয়ন, ড্রেজিং, ল্যান্ড রিক্লেমেশন, জরুরি জেনারেটর, সৌর বিদ্যুৎ, টার্মিনাল ইউটিলিটি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক পূর্ত, বৈদ্যুতিক কাজ নির্মাণ, সংগ্রহ, স্থাপন, টার্মিনাল এরিয়াতে কন্টেনার রাখার জন্য মোট ৫১০০টি গ্রাউন্ড স্লট থাকবে। মাতারবাড়ি বন্দরে ১৪.৫০ মিটার ড্রাফট এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ৮২০০ টিইইউএস ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বড় কন্টেনারবাহী জাহাজ বার্থিং করা সম্ভব হবে। ২০২৯ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউএস এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ হতে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউএস কন্টেনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে বলে উপদেষ্টা মতামত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, জাপান সরকার এবং জাইকার সহযোগিতা মাতারবাড়ি প্রকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক হবে। জাইকার প্রযুক্তিগত দক্ষতা, অর্থায়ন ও সক্ষমতা উন্নয়নের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান এবং পেন্টা ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার টুমোকাজো হাসিগাওয়া স্ব স্ব পক্ষে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। এ সময় নৌবাহিনীর প্রধান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং জাইকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। পুরো অর্থের যোগান দেবে জাইকা। ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা, অস্ত্র-গুলিসহ যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধকাল সি-ট্রাকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু, ভাড়া কমানোর দাবি