রাঙামাটিতে বর্ষবিদায় ও বরণের আয়োজন আনুষ্ঠানিক শেষ হয়েছে মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্য দিয়ে। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী রাঙামাটি জেলা শহরের চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো সাংগ্রাই উৎসব।
এ উৎসবে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ–তরুণীরা অংশগ্রহণ করতে এসেছেন। পাহাড়ের প্রধান এই সামাজিক উৎসবের সাঙ্গ অনুষ্ঠানে আগমন ঘটেছে হাজারো মানুষের।
মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) আয়োজিত এবারের রাঙামাটির কেন্দ্রীয় সাংগ্রাই জল উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
অনুষ্ঠানে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমরা সবাই চাই, পার্বত্য এলাকার সব জাতিগোষ্ঠী যারা আছে; আপনারা আমাদের ওপর নির্ভর করুন। এই এলাকায় শান্তি ফিরে আসুক। যেন কোনো ভেদাভেদ না থাকে। আমরা সবাই বাংলাদেশী, এখানে বৃহত্তর, ক্ষুদ্র বলতে কিছু নেই।’
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) একাংশের সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ জুনাঈদ উদ্দীন শাহ চৌধুরী, রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
সকালে মারমা নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। পরে পার্বত্য উপদেষ্টা ও মাসস নেতারা বক্তব্য রাখেন ।
এরপর অতিথিরা জল ছিটিয়ে সাংগ্রাই জলোৎসবের উদ্বোধন করেন। পরে মারমা যুবক–যুবতীরা একে–অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করেন। জল উৎসবকে কেন্দ্র করে রাঙামাটির মারমা জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বাঙালিসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ মারী স্টেডিয়ামে গিয়ে উৎসব উদযাপন করেছেন। মূলত: এই আয়োজনের মধ্য দিয়েই তিন পার্বত্য জেলায় বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু, বিষু, সাংক্রানসহ বর্ষবরণ উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। তবে স্থানীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও বিভিন্ন গ্রামে সাংগ্রাই জলোৎসব উদযাপন হয়ে থাকে।