জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ময়লা–আবর্জনায় ভরাট নগরের বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর। ‘সবার সহযোগিতায় বির্জাখাল পাবে প্রাণ’ এই স্লোগানে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় বাকলিয়ার ইছহাকের পুল এলাকায় খনন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এর আগে খাল খনন উপলক্ষে স্থানীয় অছি মিয়া দোস্ত ভবনের মাঠে আয়োজন করা হয় গণসমাবেশের। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী।
সমাবেশে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শপথ নেওয়ার পর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি মনে করেছি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। চট্টগ্রাম শহর কারো একার শহর নয়। সকলের দেশ ও শহরের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, তাহলেই দেশ ও শহর সমৃদ্ধ হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এই উদ্যোগের জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে স্বাগত জানাচ্ছি। পরে সাংবাদিকদের মেয়র বলেন, বাকলিয়ায় তিন–চার লাখ জনগণ আছে। বৃষ্টি হলেই এই বিশাল জনগোষ্ঠীর সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয়। বির্জাখাল পরিষ্কার হলে পশ্চিম ও দক্ষিণ বাকলিয়ার জনগোষ্ঠী জলাবদ্ধতা থেকে অনেকাংশে রেহাই পাবে।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছর উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে, মেগা প্রজক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। তারা নিজেরা নিজেরা কাজটা করত। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি সবাইকে সাথে নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। আইন আইনের জায়গায় থাকবে। এখন থেকে আমরা কঠোর হব। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে হলে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব ধরনের উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনকে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করব। হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ভুলে আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, আমাদের কয়েকটা বাজারের দায়িত্ব দিন। সেই বাজারগুলোকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা চায়নার শহরের মতো সুন্দর করবে। পাশাপাশি ১০টি স্কুলের কাজ করার সুযোগ দিন। সেগুলোর আঙিনাসহ আশেপাশের এলাকা জামায়াতের কর্মীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দেবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর খাল খনন কর্মসূচির উদ্যোগকে স্বাগত জানান স্থানীয়রা। এ সময় জনগণের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়।
জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার আই ইউ এ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুল হক, এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম–১০ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম–৯ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, বাকলিয়া থানার আমির সুলতান আহমদ, নায়েবে আমির আবুল মনসুর, সেক্রেটারি নুর আহমদ, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন সিডিএর প্রধান নির্বাহী কাজী হাসান বিন শামস্, ইঞ্জিনিয়ার ফাহমি, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসাইন, আমির হোসাইন, আবু বকর ছিদ্দিক, ব্যাংকার এয়াকুব আলী, কোতোয়ালী থানা নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুজ্জাহের, চকবাজার থানার নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, কোতোয়ালী থানার সেক্রেটারি মোস্তাক আহমদ, চকবাজার থানার এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি শহিদুল্লাহ ও কোতোয়ালী থানার এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি আ ন ম জোবায়ের।