সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কারিগরি শিক্ষা আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল শেষে মেধা চত্বরে এমন আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় কারিগরি শিক্ষা আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি তাসনীম ইসলাম বলেন, বারবার বলার পরেও আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। সব প্রকার এসি রুমের বৈঠক বাতিল। কারিগরি শিক্ষা আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জুবায়ের পাটওয়ারী বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলন হবে। কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে এখনও বৈষম্য কাটেনি। তিনি আরও বলেন, গাজীপুরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বৈঠকের পরে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধের মতো কার্যক্রম আসছে। এ সময় পেশাজীবী সংগঠনের সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে কারিগরি শিক্ষা আন্দোলন। এছাড়া কথা বলেন কারিগরি শিক্ষা আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাসফিক ইসলাম। খবর বাংলানিউজের।
দাবিগুলো হল : জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল ও নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে। ডিপ্লোমা ইন–ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে। উপ–সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নপদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে গত বুধবার ছয় দফা দাবিতে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকার সাত রাস্তা সড়ক অবরোধ করেন সরকারি–বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বৈঠক হলেও তাতে অসন্তোষ জানান শিক্ষার্থীরা।