আগামী ২ থেকে ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব–২০ নারী এমিয়া কাপ বাছাই পর্ব। এই আসরটি চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এছাড়া আগামী ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ দলের সাছে হংকং এবং চায়না জাতীয় ফুটবল দলের ২০২৬ এশিয়া কাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ দুটিও এই স্টেডিয়ামে আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে বাফুফে। এছাড়া ২০২৭ সালের এএফসি কাপের বাছাই পর্বের ভেন্যু হিসেবেও এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাছাই করেছে বাফুফে। এই সব আয়োজনের জন্য চট্টগ্রামের এই মাঠটি কেমন আছে কি কি সংস্কার দরকার তা পরখ করতে গতকাল বিকেলে এএফসি এবং বাফুফের কর্মকর্তারা এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি এসব টুর্নামেন্ট চলাকালে অনুশীলন ভেন্যু হিসেবে চট্টগ্রাম শারিরীক শিক্ষা কলেজ মাঠ এবং বন্দর স্টেডিয়ামও পরিদর্শন করেন। এমনিতেই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে বাফুফে এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। কারন এরই মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ২৫ বছরের জন্য এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে ব্যবহারের জন্য দিয়ে দিয়েছে। এর এ নিয়ে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা আন্দোলনও করেছে। ঠিক এমন অবস্থায় এএফসি এবং বাফুফের এই কর্মকর্তাদের পরিদর্শন, তিনটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা যে নতুন করেই আবার বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাহি কমিটির সদস্য যিনি আবার চট্টগ্রামেরই সন্তান সত্যজিত দাশ রুপু বলেছেন চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে তারা কোন কিছু করবেনা। যা কিছু হবে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংস্থার সাথে সমন্বয় করেই করবে বাফুফে। এই মাঠ ফিফা কিংবা বাফুফের অধীনে চলে গেলে এখানে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোন কর্তৃত্ব থাকবেনা, ক্রিকেট সহ অনেক ইভেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, তেমনটি ভাবতে নারাজ রুপু। তিনি বলেন সবকিছু চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করেই করা হবে।
সামনে একাধিক আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে বাফুফে। অথচ মাঠের মাঝখানে এখনো রয়েছে ক্রিকেটের উইকেট। এই উইকেট কি তুলে ফেলা হবে ? তেমন প্রশ্নের জবাবে রুপু বলেন এএফসির যে কর্মকর্তা এসেছেন তার দেওয়া রিপোর্টের উপরই নির্ভর করবে সবকিছু। ভুটানের নাগরিক এএফসি ম্যাচ কমিশনার মিন্দু দরজি ড্রেসিং রুম থেকে শুরু করে মাঠ, গ্যালারী, ফ্লাড লাইট, খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুম থেকে মাঠে যাওয়া এবং আসা, টেকনিক্যাল কমিটির লোকজনের বসার স্থান থেকে শুরু সবকিছু পরখ করেন। তিনি অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এএফসির কাছে তার রিপোর্ট জমা দেবেন। তার রিপোর্ট জমা পড়ার পর তাদের কি কি চাহিদা তার একটা চিটি আসবে। সে চাহিদা সমুহ যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে ততই এসব টুর্নামেন্ট আয়োজনের পথ সুগম হবে। তাবে প্রাথমিকভাবে আরো দুটি ড্রেসিং রুম, ফ্লাড লাইটের উন্নয়ন, পুরো গ্যালারীতে চেয়ার বসানো, পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মাঠের উন্নয়ন সহ বেশকিছু চাহিদার কথা তিনি জানিয়েছেন। সত্যজিত দাশ রুপু বলেন আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছি এখানে কি কি লাগবে। তবে যদি খেলা সমুহ আয়োজন করতে হয় হয়তো আমাদের আগামী এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে। আর এএফসির বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারলে তবেই ম্যাচ গুলো আয়োজন করা যাবে।
এই তিন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টকে ঘিরে যে বিশাল সংস্কার কাজ আর তার জণ্য যে খরচ সেটা কে বহন করবে ? তেমন প্রশ্নের জবাবে রুপু বলেন আপাতত সব আমাদেরকে অর্থাৎ বাফুফেকে বহন করতে হবে। পরে যখন ফিফার সাথে কাজ শুরু হবে তখন সে খরচটা সমন্বয় করা যাবে। রুপু বলেন ফিফা সবসময় বলে আসছে অন্তত তিনটি আন্তর্জাতিক ভেন্যু তৈরির। সে হিসেবে চট্টগ্রামকেই তারা বেছে নিয়েছে। আর এই মাঠ বাফুফের কাছে চলে গেলে চট্টগ্রামের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাবে তেমন ধারণাটাও ভুল । তিনি বলেন এই মাঠটি আন্তর্জাতিক মানের হয়ে গেলে চট্টগ্রামের ফুটবলেরই বেশি উন্নয়ন হবে। চট্টগ্রামই সবচাইতে বেশি সুবিধা ভোগ করবে। এখানে কোন খেলাই বন্ধ হবেনা। তবে বাফুফের সাথে সমন্বয় করে সবকিছু করা যাবে। গতকালের এই পরিদর্শনকালে এএফসি এবং বাফুফে কর্মকর্তাদের সাথে চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম, ডিএফএ নির্বাহি সদস্য সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি উপস্থিত ছিলেন।