যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন। ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক নীতির সমালোচনা করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গতকাল শুক্রবার বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকে এই আহ্বান জানান। বৈঠকে শি বলেন, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের ধারা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিবেশ একসঙ্গে রক্ষা করা। পাশাপাশি একতরফা হুমকি যৌথভাবে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন। ট্রাম্প গত সপ্তাহে শুল্কযুদ্ধ শুরু করার পর এদিন প্রথম প্রকাশ্যে কথা বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি। তিনি বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। আর বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ইইউ এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার আছে। খবর বিডিনিউজের।
বহুমেরু বিশ্বে চীন সবসময়ই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেরু হিসেবে দেখেছে। ইউরোপের ঐক্য ও বিকাশে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেওয়া প্রধান দেশগুলোর মধ্যে আছি আমরাও, বলেন শি। ওদিকে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সরাসরি আলোচনায় বসা। পাশাপাশি তিনি ইউরোপ ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক আরও ভারসাম্যপূর্ণ করারও আহ্বান জানান। চীনের সঙ্গে ইইউ’রও বাণিজ্যের নিজস্ব কিছু বিষয় আছে। ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউরোপসহ বহু দেশের ওপর নতুন উচ্চহারের শুল্ক আরোপ করলেও বুধবার এক নাটকীয় সিদ্ধান্তে বেশিরভাগ দেশেই ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন। তবে চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে তা ১৪৫ শতাংশে নিয়ে যান, যার পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এ পরিস্থিতিতে সানচেজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষিত ৯০ দিন সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে সবচেয়ে ভাল কোনও চুক্তিতে পৌঁছার আশা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ইইউ–র পাল্টা শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা থাকলেও ট্রাম্পের ইউ–টার্নের কারণে আলোচনকে সুযোগ দেওয়ার জন্য ইইউ আপাতত শুল্কারোপ স্থগিত রেখেছে। ওদিকে, চীনে বহুবছরের মধ্যে এবার নিয়ে তৃতীয়বার সফর করলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী সানচেজ। তার এ সফরের লক্ষ্য হচ্ছে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির মধ্যে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে গড়ে তোলা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই চীনকে “সহযোগিতার অংশীদার, অর্থনৈতিক প্রতিযোগী এবং পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী” আখ্যা দিয়েছে।












