গাজার ভয়াবহতাকে আর অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই

নগরীতে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

আজাদী প্রতিবেদন  | শুক্রবার , ১১ এপ্রিল, ২০২৫ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে ইতিহাসের জঘন্যতম মানবিক বিপর্যয় হিসেবে দাবি করেছেন বিএনপি, চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, একটি জাতিকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করার যে ভয়াবহতা সেখানে চলছে, তা আর অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই। শিশুরা ক্ষুধায় কাতর, হাসপাতালগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, চিকিৎসা নেই, পানি নেই, খাদ্য নেইএই বিভীষিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করা অপরাধ।

গাজা ও রাফা সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা, মানবিক বিপর্যয় এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ ও সংহতি র‌্যালিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবাবে এ র‌্যালি আয়োজন করে। বাদ আসর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয় র‌্যালিটি। সেখানে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

র‌্যালি পূর্ব এক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

এসময় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, গাজার প্রতিটি করুণ চিত্র আমাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এমন বর্বরতা শুধু নিন্দার নয়, বিশ্বজুড়ে সোচ্চার প্রতিরোধের দাবি রাখে। তিনি আরও বলেন, আজকের এই র‌্যালির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব মানবতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বারবার যুদ্ধাপরাধ করছে। অথচ জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাংলাদেশ থেকে আমাদের শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে, কারণ আমরা ফিলিস্তিনের ন্যায়সংগত অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামের পক্ষে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন বলেন, ফিলিস্তিনের মাটি রক্তে ভিজে গেছে। প্রতিটি ঘরবাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। এই অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বিশ্ববাসীকে জেগে উঠতে হবে। আমরা যারা আজ এখানে দাঁড়িয়ে আছি, আমরা এক ধরনের নৈতিক দায়িত্ব পালন করছিমানবতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার দায়িত্ব।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ.এম. নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম. . হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল, তরুণ বিএনপি নেতা সাঈদ আল নোমান, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, এম.. আজিজ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, শাহ আলম, শওকত আজম খাজা, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম রাসেল, শিহাব উদ্দিন মুবিন, মনজুরুল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা আবু জাফর চৌধুরী নুরুল হুদা চেয়ারম্যান ও ফিরোজ আহমদ, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুস, নুরুল আমিন ও চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, সাবেক যুবদল নেতা মোশারফ হোসেন দীপ্তি, মোহাম্মদ শাহেদ, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন বুলু, সদস্য সচিব জমির উদ্দিন নাহিদ, নগর ছাত্রদলের আহবায়ক ছাত্রসাইফুল আলম।

বিএনপি নেতৃবৃন্দ ছাড়াও র‌্যালিতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ অংশ নেন। সবাই গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা দাবি করেন এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও সরকারি পর্যায়ে জোরালো অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, আজকের এই র‌্যালি কেবল প্রতিবাদ নয়, একটি ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে অংশগ্রহণের প্রকাশ। এই গণজাগরণ চলমান থাকবে, যতদিন না ফিলিস্তিন স্বাধীনতা পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসি হিলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের অনুমতি
পরবর্তী নিবন্ধএসএসসি পরীক্ষা