প্রতারণার আরেক মামলায় ইভ্যালির রাসেল ও শামীমার সাজা

| সোমবার , ৭ এপ্রিল, ২০২৫ at ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার আরেক মামলায় ইকমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমান গতকাল রোববার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন তিনি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাকিবুল ইসলাম রায়ের পর বলেন, আসামিরা পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। খবর বিডিনিউজের।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরুর পর গাড়ি, মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনের মত পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়া ফেলে অনলাইন মার্কেট প্লেস ইভ্যালি। তাদের চটকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায়। কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি। এক পর্যায়ে ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা। সে সময় রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েকশ মামলা হয়; এ মামলা তারই একটি। মুজাহিদ হাসান ফাহিম নামের এক গ্রাহক ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ মামলা করেন। মামলার বিবরণে বলা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে মুজাহিদ হাসান ফাহিম ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল অর্ডার করেন এবং অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেন।

তবে কর্তৃপক্ষ ৪৫ দিনের মধ্যে বাইকটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। পরে তিনি ইভ্যালির ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ তাকে পাঁচ লাখ টাকার চেক দেয়। তবে ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় চেকটি নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ করেন। আসামিদের কথা বিশ্বাস করে তিনি চেকটি ব্যাংকে জমা দেননি। পরে বাদী টাকা আদায়ের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। তাতে টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি উকিল নোটিস পাঠান। তাতেও কাজ না হওয়ায় তিনি আদালতে গিয়ে মামলা করেন রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে।

এক গ্রাহকের করা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। এরপর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়; নেওয়া হয়েছিল রিমান্ডেও। ইভ্যালির পুনর্গঠন হিসাবনিকাশের সুবিধার্থে তার স্ত্রী শামীমাকে এক বছরের মাথায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেয় আদালত। পরে রাসেলও জামিনে মুক্তি পান। এর আগে ২০২৪ সালের ২ জুন চেক প্রতারণার এক মামলায় রাসেল ও শামীমাকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেয় চট্টগ্রামের একটি আদালত। আর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আরেক মামলায় তাদের দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধত্রিপুরা নেতারা তাদের জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করেনি : সমাবেশে ওয়াদুদ ভূইয়া