চট্টগ্রাম কাস্টমসে আফগানিস্তানের তৈরি ১৫ হাজার ৮৬৮ লিটার ‘পামির কোলা’ নামের কোমল পানীয় প্রকাশ্য নিলামে তোলা হচ্ছে আগামী বুধবার। গ্রীন, রেড ও অরেঞ্জ তিন রঙের প্রতিটি ৩০০ মি.লি ওজনের এসব ক্যানের মেয়াদ আছে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য ধরেছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৬২৭ টাকা। প্রকাশ্য নিলামে এসব পানীয় পণ্য কিনতে চাইলে বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) দরমূল্যের ওপর ২০ শতাংশ পে অর্ডার জমা দিতে হবে। এছাড়া নিলামে অনুমোদন পাওয়া সর্বোচ্চ দরদাতাকে মূল্যের ওপর সরকার নির্ধারিত ১০ শতাংশ হারে আয়কর এবং ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও জামানতের বাইরের অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে দ্রুত পণ্য খালাস করতে হবে।
জানা গেছে, পচনশীল পণ্যের দ্রুত নিলাম আয়োজনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থায়ী আদেশ জারি করে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিগত সময়ে অনেক খাদ্যপণ্য পচে যাওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাওয়া দূরে থাক, উল্টো পণ্য ধ্বংসে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পচনশীল পণ্যসহ নিলামযোগ্য পণ্যের নিলাম দ্রুততার সাথে কার্যকর করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কে এম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা দ্রুত নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করছি। একইসাথে নিলাম অযোগ্য পণ্যের ধ্বংসের কাজও চলমান রয়েছে।
বিডাররা বলছেন, নিলামে এখনো কিছু ভোগান্তি রয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে–পণ্য অনুমোদন দিতে বিলম্ব করা। এতে বিডাররদের পে অর্ডার মাসের পর আটকে থাকছে। দ্রুততার সাথে পণ্যের বিক্রয় অনুমোদন দিলে কাস্টমস ও বিডার উভয়পক্ষের জন্য ভালো হয়।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষ চার্জও পায় না।