নগরীর মার্কেটগুলোতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। চৈত্রের খরাতাপ উপেক্ষা করে গতকাল দিনভর ক্রেতারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ঘুরে ঘুরে নিজেদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরেছেন। সকালের দিকে মার্কেটে তেমন চাপ না থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই ক্রেতার চাপ বাড়ে। তবে ইফতারের পর থেকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে মার্কেটে জমজমাট বেচাবিক্রি চলছে। ক্রেতারাও স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা সারছেন। তবে কয়েকদিন ধরে গরমের তীব্রতা একটু বেশি। এতে ক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল নগরীর টেরীবাজার, নিউ মার্কেট বিপণী বিতান, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, স্যানমার ওশান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমীন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট, ফিনলে সাউথ সিটি এবং মতি টাওয়ারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি দোকানে পা ফেলার জায়গা নেই। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারাও বিরতিহীনভাবে বিভিন্ন ধরনের পোশাক এবং পণ্যের কালেকশন দেখিয়ে যাচ্ছেন।
ক্রেতারা আগ্রহ সহকারে সে সব পণ্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন। অনেক দোকান শো রুমে পণ্য বিক্রি করছেন। অনেক জামা কাপড়ের দোকানে ৫০–৬০ শতাংশও ছাড় দিচ্ছেন। বিশেষ করে প্রায় সব নামী দামী ব্র্যান্ডের শো–রুমে ৫০শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি। ছাড়মূল্যে পাঞ্জাবি কেনায় আগ্রহী তরুণরা ভিড় করছেন। এছাড়া বিউটি পার্লার, সেলুন, আতর–টুপির দোকান ও জুয়েলারি শপগুলোতেও বেড়েছে ভিড়।
নগরীর নিউমার্কেটে বিপণী বিতানে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাফওয়ান ইকবালের সাথে। তিনি বলেন, পাঞ্জাবী কিনতে এসেছি। পাঞ্জাবি ছাড়া আসলে ঈদের আনন্দ পূর্ণ হয় না। কিছুদিন আগে একবার এসেছিলাম পাঞ্জাবি কিনতে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে ফিরে গেছি। এখন অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে কিনতে এলাম। সেন্ট্রাল প্লাজায় আসা ক্রেতা সুমাইয়া আকতার জানান, ঈদের প্রায় সব কেনাকাটা শেষ। টুকিটাকি কিছু কসমেটিকসের কেনাকাটা বাকি ছিল। আজকে (গতকাল) তাই মার্কেটে এসেছি।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব ফজলুল আমিন বলেন, জহুর হকার্স মার্কেটে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বিশেষ করে ইফতারের পর থেকে মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এবারের ঈদ বাজারে আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। কম দামে ভালো মানের পণ্য কেনার জন্য সব সময়ই ক্রেতারা জহুর হকার্স মার্কেটে ভিড় করেন।
তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির অধীনে ১১০টি মার্কেটে আছে। এখানে সব ধরনের পণ্য রয়েছে। আমাদের সবগুলো মার্কেটে জমজমাট বেচাবিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ক্রেতা আকর্ষণে ভারত, চীন ও থাইল্যান্ডের মতো দেশ থেকে ভালো ভালো পণ্য আমদানি করেছেন। তামাকুমণ্ডি লেইনে ক্রেতারা আসেন ভালো মানের পণ্য কিনতে। ঈদের বেচাবিক্রি নিয়ে আমরা সন্তুুষ্ট। এখন মার্কেটে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা চলছে। ক্রেতাদের ভিড়ও লক্ষ্যণীয়।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর বলেন, ভালো মানের পণ্যের জন্য টেরীবাজারের আলাদা একটি স্বীকৃতি আছে। আমাদের এখানে সব ধরণের ক্রেতারা আসেন পছন্দের পণ্যটি কেনার জন্য। ব্যবসায়ীরা নিজেদের জায়গা থেকে ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করেন। ঈদের সময় একদম সন্নিকটে। তাই ক্রেতা বিক্রেতা কারো হাতে সময় নাই।