কর্ণফুলীর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

কোটি কোটি টাকা পাচার!

| বৃহস্পতিবার , ২০ মার্চ, ২০২৫ at ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট, টেন্ডার বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অবৈধ কমিশন গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া, উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের পাশাপাশি নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে দুদক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ সংস্থাটি কর্ণফুলী উপজেলার ইউএনও, প্রকল্প কর্মকর্তা ও এলজিইডি অফিসে চিঠি পাঠিয়েছে। এতে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের অধীন বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর হালনাগাদ তালিকার তথ্য চাওয়া হয়েছে। দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

৭ বছরের প্রকল্পের তথ্য চেয়ে চিঠি

দুদকের পাঠানো চিঠিতে কর্ণফুলী উপজেলায় ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত সকল প্রকল্পের তালিকা, প্রকল্পের নাম, বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ, সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তার নাম, ঠিকানা ও পদবীসহ বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া, ওই ৭ বছর সময়ের মধ্যে মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা বা অন্য কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের হিসাবও জমা দিতে বলা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে এসব তথ্য দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ১৯ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর বিধি ২০ অনুযায়ী এই তথ্য চাওয়া হয়েছে। যদি কেউ তথ্য গোপন করে বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয় সেক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে দুদক।

অফিসগুলোর নীরবতা, দুদকের বক্তব্য

দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম অফিসে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশনের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। তবে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত, সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে, গোলাম মোস্তফা ও মো. জাহেদুল আলম চৌধুরী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উমা খান কাফি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুদকের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, ‘দুদক আমলে নেওয়ার মতো কোনো অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে এবং সত্যতা মিললে মামলা করে আইনি ব্যবস্থা নেন।’

এই অনুসন্ধানের ফলে কর্ণফুলী উপজেলার গত ৭ বছরের উন্নয়ন প্রকল্প ও আর্থিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ভাড়ায় নৈরাজ্য