অফিসে বসেই মাঠ কর্মীদের মনিটরিং

জিয়াউল-সিমু দম্পতির স্মার্ট মনিটরিং অ্যাপসে সাড়া

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৮ মার্চ, ২০২৫ at ৪:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সায়মা ছিদ্দিকা সিমু। তিনি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী। ছোটবেলা থেকে লেখাপড়া ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় তার অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। একদিন ক্লাসে বলা হলো একটি অ্যাপস তৈরি করতে। কী বিষয়ে অ্যাপস তৈরি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে তার স্বামী সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদেরের সাথে পরামর্শ করেন। জিয়াউলও সীতাকুণ্ড পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে যোগদানের পর থেকে কর্মীদের যথাযথভাবে মনিটরিং করার উপায় খুঁজছিলেন।

স্ত্রীর আগ্রহে নতুন চিন্তা মাথায় আসে জিয়াউল কাদেরের। তিনি স্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, যদি অ্যাপস তৈরি করতে হয় তাহলে এমন একটি অ্যাপস তৈরি করতে হবে, যেটি দিয়ে একটি অফিসের কর্মকর্তাকর্মচারীদের যথাযথ মনিটরিং করা যায়।

এক পর্যায়ে দুজনের চিন্তাধারা মিলে যাওয়ায় স্বামী জিয়াউল কাদেরের পরিকল্পনায় অ্যাপস তৈরিতে নেমে পড়েন সায়মা ছিদ্দিকা সিমু। শুরু হয় কাজ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এটি নিয়ে স্টাডি শুরু করেন এই দম্পতি। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোদমে অ্যাপস তৈরির কাজ শুরু করেন। আগস্টের দিকে কাজ সম্পন্ন হয়। সেপ্টেম্বরে এটি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়। বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তারা এই অ্যাপস ব্যবহার করছেন।

অ্যাপসের বাস্তবায়নকারী কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্রী সায়মা ছিদ্দিকা সিমু বলেন, এই অ্যাপস মোবাইলে ব্যবহারের মাধ্যমে অফিসে বসে একজন কর্মকর্তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থানকারী কর্মীদের অবস্থান জানতে পারবেন এবং কার্যক্রম মনিটরিং করতে পারবেন। তাই আমি এটির নাম দিয়েছি ‘স্মার্ট মনিটরিং অ্যাপস’।

তিনি বলেন, অফিসের নির্দেশনা মেনে একজন কর্মী যথাসময়ে উপস্থিত হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে অ্যাপসে প্রবেশ করে নিজের একটি ফটো তুলে সেখানে পোস্ট করলে গুগল ম্যাপ ও স্বয়ংক্রিয় ঘড়িতে তিনি যেখানে আছেন তা স্পষ্ট হয়ে যায়। অন্য কর্মকর্তারা গুগল ও জিপিআরএস ট্র্র্যাকিং থেকে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে যান সবকিছু। এভাবে একটি দপ্তরের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবাইকে সঠিকভাবে মনিটরিং করা যাবে। এমনকি তিনি কর্মস্থলে আছেন কিনা তাও জানা যাবে। কেউ দেরি করে এলে এ অ্যাপসে বোঝা যাবে।

এভাবে পুরো দিনের কাজ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কর্মীদের দিয়ে সবাইকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদের। তিনি জানান, এই অ্যাপসে কাগজের ব্যবহার কমিয়ে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, এ উপজেলাকে প্রযুক্তিগতভাবে আরো আধুনিক করতে কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে অ্যাপসটির বিষয়ে তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সৈনিকরা স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা দেন
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে অস্ত্রসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক