বান্দরবানে পর্যটন স্পট প্রান্তিক লেকের আশপাশের সরকারি বনাঞ্চলের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র। এতে ধংসের মুখে পড়েছে সুবজ গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ মনোরম পর্যটন স্পট প্রান্তিক লেকের সৌন্দর্য। অভিযোগ উঠেছে, প্রান্তিক লেক ও জেলা প্রশাসনের কয়েকজন অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে সরকারি বনাঞ্চল উজাড় করছে কাঠ চোরাকারবারিরা। স্থানীয়রা জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের হলুদিয়া এলাকায় জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটন স্পট প্রান্তিক লেকের আশপাশের সরকারি বনাঞ্চলের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে কাঠ চোরাকারবারি একটি সিন্ডিকেট। চক্রটির মূলহোতা হলেন কাইচতলীর বাসিন্দা আমিন ও জাহেদ। চক্রটির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রান্তিক লেকের টিকেট কাউন্টার ম্যান কনক সেন এবং জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারীও। দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৫০/৬০ জন শ্রমিক দিয়ে সরকারি বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছগুলো কাটা হচ্ছে। ছয়টি জিপ গাড়িতে দিনেরাতে গাছ পাচার করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আলম, সাপ্রুমং অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে পর্যটন স্পট প্রান্তিক লেকের আশপাশের সরকারি বনাঞ্চলের শতশত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ৬০/৭০ জনের মত শ্রমিক গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। গাছ কেটে ডালপালাগুলো সাতকানিয়া– লোহাগাড়ার ইটের ভাটায় জ্বালানি কাঠ হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। আর মূল গাছগুলো খুঁটি হিসেবে গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছে চট্টগ্রামের বাজালিয়া, সাতকানিয়ায়। প্রতিদিন ৩টি জিপগাড়িতে করে গাছগুলো পাচার করা হচ্ছে। চোরাকারবারিদের সঙ্গে প্রান্তিকলেক ও প্রশাসনের কয়েকজন জড়িত রয়েছেন। যোগসাজশে গাছগুলো কেটে নিতে তিন লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে উভয়ের মধ্যে।’
তবে প্রান্তিক লেক পর্যটন স্পটের টিকেটম্যান কনক সেন বলেন, ‘কারা গাছ কাটছে আমি জানি না। আমি দীর্ঘ সাত বছর ধরে প্রান্তিক লেকে চাকরি করছি। গাছ কাটার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
অভিযুক্ত কাঠ ব্যবসায়ী আমিন ও জাহেদ বলেন, গাছের পাঁচ একরের একটি বাগান আমরা মোজাফফর থেকে কিনেছি। সরকারি বনাঞ্চলের মধ্যখানের বাগান ব্যক্তি কিভাবে বিক্রি করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আশপাশের সবগুলো সরকারি বনাঞ্চল এটি সত্যি, কিন্তু সরকারি কোনো গাছ কাটা হচ্ছে না।
স্থানীয় সূয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা বলেন, গাছ কাটার খবর পেয়েছি, এগুলোর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি সমঝোতা করে দিয়েছি। এমন কথা কেউ বললেও সেটি সত্য নয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।