ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) আওতায় চট্টগ্রামে আড়াই লাখের বেশি হতদরিদ্র–দুস্থ পরিবারকে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল দেবে সরকার। ঈদের আগে (২০ থেকে ২২ রমজানের পর) উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর মাঝে ভিজিএফের এই চাল বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরী) মো. ফখরুল আলম।
তিনি আজাদীকে বলেন, ভিজিএফ চালের বরাদ্দ আমাদের কাছে চলে এসেছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে চালগুলো হস্তান্তর করব। এই কর্মসূচির আওতায় ঈদে একটি গরীব পরিবার ১০ কেজি করে বিনামূল্যের চাল পাবেন। তিনি বলেন, এমন আরও বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। যেমন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, ওএমএস কর্মসূচি রয়েছে। ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে এখন প্রতিদিন নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ডিলারদের মাধ্যমে ৪১ টন চাল এবং ৪১ টন আটা দেয়া হচ্ছে। একজন ক্রেতা ৩০ টাকা দামে ৫ কেজি চাল এবং ২৪ টাকা দামে ৫ কেজি আটা ক্রয় করতে পারেন ডিলারদের কাছ থেকে।
এরমধ্যে ২৯টি ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট ডিলার রয়েছে। সাধারণ মানুষ ওই নির্দিষ্ট ডিলারের দোকানে গিয়ে চাল এবং আটা ক্রয় করতে পারেন। অপরদিকে নগরীর ১২ ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট ডিলার না থাকায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ট্রাকের মাধ্যমে ১২ পয়েন্টে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে। এসব চাল বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে বড় সহায়তা করবে। এই বরাদ্দ গুলো তদারকি করবেন ডিসিরা।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও ১৫ পৌরসভায় গরিব–দুস্থ পরিবারগুলো পাবে ভিজিএফের চাল। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই খাদ্যশস্য সহায়তা বিতরণ করা হবে। সরকার প্রতি ঈদে (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) ভিজিএফের আওতায় সারা দেশে হতদরিদ্র–দুস্থ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে। এজন্য জেলা প্রশাসকদের বরাবরে ঈদের আগেই ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। গ্রামের গরিব, অসহায় পরিবারগুলো যাতে ঈদে কষ্টে না পড়ে সেজন্য এই বরাদ্দ দেয়া হয়।
জানা গেছে, গত বছর ঈদুল ফিতরে চট্টগ্রামে ভিজিএফের আওতায় উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে ২ লাখ ৪৪ হাজার হতদরিদ্র–দুস্থ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছিল। এবার এই বরাদ্দ আরো বাড়বে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফখরুল আলম।
এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ঈদে সারাদেশে মোট ১ কোটি পরিবার ১০ কেজি করে চাল পাবে একদম ফ্রি (বিনামূল্যে)। আগামী মার্চ ও এপ্রিল এই দুই মাসে সারাদেশে প্রায় ৭ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে দেড় লাখ টন করে দুই মাসে তিন লাখ টন চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে বিতরণ করা হবে। ৫০ লাখ পরিবার প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি করে পাবে। টিসিবির মাধ্যমে আরও ৫০ লাখ টন করে দুই মাসে এক লাখ টন চাল যাবে। ওএমএসের মাধ্যমে পাবে আরও এক লাখ টন।