সবাইকে বিশ্বাস করা গেলেও আওয়ামী লীগকে নয়

রাঙ্গুনিয়ায় হুম্মাম কাদের

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১২ মার্চ, ২০২৫ at ১২:০৫ অপরাহ্ণ

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, নোংরা রাজনীতি আওয়ামী লীগ করেছিলো, সেটা আমরা করি না। যারা আমাদের কষ্ট দিয়েছে, আমাদের সন্তানদের কষ্ট দিয়েছে, এই কষ্ট আমরা কাউকে দেবো না। তবে তাদের নজরে রাখবো। মনে রাখবেন, সবার উপরে বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু আওয়ামী লীগকে নয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কাদেরনগর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাসভবন প্রাঙ্গণে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উপজেলা এবং পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ মহসিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তরজেলা বিএনপি নেতা শওকত আলী নূর, মো. জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন চৌধুরী, উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মো. ইউসুফ চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মো. খোরশেদ আলম, মো. মসিউদ্দৌলা, মো. হেলাল উদ্দিন শাহ, এখতিয়ার হোসেন, মো. শহিদুল্লাহ, মো. আনছুর উদ্দিন, কাজী নাজিম উদ্দীন, আবু বক্কর, হেলাল আহমদ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন মাকসুদুর রহমান চৌধুরী ও মো. ফারুকুল ইসলাম।

হুম্মাম কাদের চৌধুরী আরো বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে, ভোট দিয়েছে, তারাও আমাদের পরিবারের মানুষ। আমার পরিবারেও অনেক আওয়ামী লীগ আছে। আপনাদেরও হয়ত কোনো মামাতো ভাই, চাচাতো ভাই কেউ না কেউ তো আওয়ামী লীগ করে। এখন আমরা যদি বার বার করে বলি, আওয়ামী লীগের সাথে আমাদের সম্পর্ক থাকবে না, সেটা তো আর হবে না। আপনাদের ধরে নিতে হবে, যারা আওয়ামী লীগ করে, তারা সারাজীবন তাই করবে। আমি আপনাদের বলছি না, তাদের বুকে টেনে নিন। নিজ দলের কিছু নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেকেই আমাদের সাথে থেকে মোনাফেকি করছে। অনেকে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে, আমাদের পিঠে ছুরি দিয়েছে। বিপদের সময় খুব কম মানুষ পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল আমার। যারা পাশে দাঁড়িয়েছিল অবশ্যই তাদের মূল্যায়ন করা হবে। আর যারা আমাদেরকে ধোঁকা দিয়েছিলো, তাদেরও তালিকা বানিয়েছি আমি। গতবারের ইফতার মাহফিলে আগুন দিয়ে পণ্ড করার কথা উল্লেখ করে হুম্মাম কদের বলেন, গতবার আমাদের ইফতারের প্যান্ডেলে আওয়ামী লীগ এসে আগুন দিয়েছিলো। নেতাকর্মীরা তখন আমাকে এসে বলেছিলো, হামলার সম্ভাবনা রয়েছে, এলাকায় আসা ঠিক হবে না। তখম আমি মেনে নিলেও আমার মা বলেছিলো, কাদের নগর আমার বাড়ি, আমার বাড়ি থেকে আমাকে কে বাইরে রাখতে পারে আমি দেখতে চাই। আমার মা এখানে চলে আসলো, এসে দেখলো গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। খেজুর দিয়ে ইফতার করলো। তখন এলাকাবাসী যারা ছিলো, তাদেরকে আশ্বস্ত করলো, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার রাঙ্গুনিয়া ছেড়ে কোথাও যাবে না।

রাঙ্গুনিয়ার নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বার বার করে বলা হচ্ছে, রাঙ্গুনিয়ার নেতৃত্ব দিতে হবে রাঙ্গুনিয়ার মানুষদের দিয়ে। বাবা ওয়াদা করে গিয়েছিলো, মরে গেলে দাফন যেনো রাঙ্গুনিয়াতে করা হয়। এই বাড়িতে দাঁড়িয়ে আমিও বার বার করে বলে দিতে চাই, ওয়াদা করে যাচ্ছি আপনাদের কাছে, মরে গেলে বাবার পাশে শুইবো না, রাঙ্গুনিয়ার মাটিতেই শুইবো।

বিপদে রাঙ্গুনিয়ার মানুষকে বার বার পেয়েছেন জানিয়ে হুম্মাম কাদের বলেন, আমার বিপদের সময় রাউজানের মানুষকে পাশে পাইনি, ফটিকছড়ির মানুষকে পাশে পাইনি, পাশে পেয়েছি রাঙ্গুনিয়া মানুষকে এবং তাদের উপরই ভরসা করেছিলাম। রাঙ্গুনিয়ার মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলো। বাবাকে দাফন করার সময়কার ছবি এখনো যখন দেখি, দেখতে পাই বেশিরভাগ মানুষ রাঙ্গুনিয়ার। আমার খারাপ সময়ে আপনারা যেমন আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, যতদিন বেঁচে আছি, রাজনীতি করি আর না করি, রাঙ্গুনিয়ার গোলাম হিসেবে আমি থেকে যাবো। বক্তব্যের শেষ অংশে নারায়া তাকবির ধ্বনিতে নেতাকর্মীদের উজ্জ্বীবিত করে তুলেন হুম্মাম। এসময় ঈদের নামাজ রাঙ্গুনিয়ায় আদায় এবং মডেল মসজিদে জুম্মার আদায় করে নিয়মিত নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেস্টুরেন্টের ছাদে বিদুৎস্পৃষ্টে কর্মচারীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধহালদা নদীতে অভিযানে ৬,৭০০ মিটার ঘেরাজাল জব্দ