রাউজান, বোয়ালখালী, বাশখালী এবং খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পৃথক অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি বসতঘর এবং ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। রাউজানে আগুনে তিনজন আহত হয়েছেন এবং দগ্ধ হয়ে চারটি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
রাউজান : রাউজান প্রতিনিধি জানান, গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে রাউজান পৌরসদর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাহনগরের তাজ মোহাম্মাদ চৌধুরী বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে পুড়ে যায় সাত পরিবারের বসতঘর। আগুনে ঝলসে আহত হয়েছেন তিন জন। পুড়ে অঙ্গার হয়েছে চারটি গরু।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, রৌশন আকতার নামে এক নারী রান্না ঘরের গ্যাসের চুলায় ইফতারি তৈরি করার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। আগুনে দগ্ধ হয় গৃহিণী রৌশন আকতার, মোহাম্মদ মোস্তাফা (৩৫) ও মো. রানা (২৫)। দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও মোস্তাফাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আগুনের ভয়াবহতায় ঘরের বাইরে থাকা চারটি গরুও অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে। আগুন দেখে ফায়ার স্টেশনে খবর দেয়ার পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় পাড়ার লোকজন। পরে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে পুড়ে ছাই হয় রৌশন আকতার, আনোয়ারা বেগম, মোহাম্মদ লোকমান, আবু তৈয়ব, মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ মোস্তফা ও মোহাম্মদ ইলিয়াসের ঘর। রাউজান ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মামুন খান বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে বাড়ির অন্যান্য ঘর রক্ষা করলেও এর আগেই সাত পরিবারের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
বোয়ালখালী : বোয়ালখালী প্রতিনিধি জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পোপাদিয়া ৩ নম্বর ওয়ার্ড আনোয়ার ডাক্তারের বাড়িতে বৈদ্যুতিক শট সার্কিটের আগুনে পুড়ে গেছে ৫ বসতঘর। বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ ফিরোজ খান বলেন, বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ৫টি বসতঘর পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে আবদুস শুক্কুরের সেমিপাকা ঘর, শেখ জাফর উল্লাহর টিন সেট ঘর, মোহসেন আলীর সেমি পাকাঘর, শেখ শহীদের সেমি পাকাঘর ও হোসেনের পাকাঘর পুড়ে যায়।
বাঁশখালী : বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের বরইতলী খাইর আহমেদের বাড়িতে গতকাল বিকালে অগ্নিকাণ্ডে ঘটে। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় বাড়ির মালামাল পুঁড়ে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের।
জানা যায়, গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে খাইর আহমেদের স্ত্রী বাড়িতে একা কুরআন পড়ছিলেন। হঠাৎ দেখে আগুন বের হয়ে চিৎকার দেন তিনি। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও বাড়ির কোন মালামাল রক্ষা করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।
দীঘিনালা : খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় লারমা স্কয়ারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ১২ দোকান। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে লারমার স্কয়ারের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। প্রায় আধা ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয়রা জানায়, রাত ৩টার দিকে লারমা স্কয়ারের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে ফায়ার সার্ভিস। পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী ছিল। দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।