ট্রাম্পের হাতে যে ‘ট্রাম্প–কার্ড’ সে কথা কারো অজানা নয়। কিন্তু গেল শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন সাহায্য ও সহযোগিতার উপর সম্পূর্ণভাবে নিভর্রশীল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সে কথা বুঝি ভুলে গিয়েছিলেন। বিতর্কে নেমেছিলেন বিশ্বমোড়ল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সাথে। অপরিপক্ক ও বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ সমরনায়ক প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি বোধকরি প্রকাশ্যে তাকে করা অপমান সহ্য করতে পারেননি। সহ্য করারও কথা না। ঘর ভর্তি সাংবাদিক ও ক্যামেরার সামনে এমন নেহস্তা। ফলে অতি ক্ষমতাধরের সাথে তুমুল বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে এ নিয়ে উদ্বেগ ছিল সবার। এই ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনে আপাতত কোনো সামরিক সহায়তা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। একই সাথে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন–যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিকল্পনা করছে বলে প্রকাশ। ফলে যা হবার তাই হলো। বড্ড বেকায়দায় আছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে তাকে এখন তেঁতো টেবলেট গিলতে হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে স্পষ্ট ভাষায় অনেকটা হুমকির সুরে বলে দিয়েছেন, ‘হয় আপনি একটি চুক্তি করেন, নয়তো আমরা বেরিয়ে যাবো।’ কিছুটা দেরিতে হলেও জেলেনস্কি টের পেলেন তিনি ওভাল অফিসে কী ভুলটাই না করেছিলেন। বেটার লেইট দেন নেভার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের পর জেলেনস্কি এক্স–হ্যান্ডেলে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘ইউক্রেনে টেকসই শান্তির লক্ষ্যে তিনি ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বে কাজ করতে আগ্রহী।’ কেবল তাই নয়, ট্রাম্পকে বাগে রাখতে তিনি ওয়াশিংটনের সাথে ‘খনিজ চুক্তি’ করতেও প্রস্তুত আছেন বলে জানান।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আমেরিকা সফর শুরু করেছিলেন গেল শুক্রবার। উদ্দেশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইউক্রেন–রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও যুদ্ধ বন্ধের একটি রাস্তা বের করা। তবে তিনি যে তার প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জনে সফল হবেন না সে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত তিনিও জানতেন। কেননা শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে ছিলেন এবং তার নানা মন্তব্যে তিনি (ট্রাম্প) পুতিনের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। ওভাল অফিসে তুমুল বাকবিতন্ডার পর এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকিকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয় বলে সংবাদে প্রকাশ। একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রতি এই ধরনের আচরণ ছিল সমস্ত সৌজন্য ও শিষ্টাচারের বাইরে। কিন্তু এমনটিই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন দ্বিতীয়বারে মতো ক্ষমতায় এলেন তখন কেউ কেউ ধরে নিয়েছিলেন যে এবার বোধকরি রাশিয়া ও ইউক্রেনের এই ‘অসম’ যুদ্ধের অবসান হবে। বন্ধ হবে মৃত্যু, ধ্বংসযজ্ঞ। শান্তি ফিরবে ইউক্রেন ও ইউরোপে। একথা সত্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। সে কথা তিনি তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি যুদ্ধ বন্ধ করবেন, তবে কীসের বিনিময়ে? ইউক্রেনকে কী তার জন্যে চরম ত্যাগ দিতে হবে? সে ছাড়ের পরিমাপ কী, কতটুকু? এই নিয়ে সংশয় ছিল সবার– ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে ইউরোপীয় নেতাদের। ওভাল অফিসের ওই আলোচনায় জেলেনস্কি প্রকাশ্যে অপমানিত হয়েছেন। কিন্তু উল্টো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এই বলে, তিনি (জেলেনস্কি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন এবং তিনি ‘নির্বাচন ছাড়াই এক স্বৈরশাসক।’ এই অসুন্দর ও আনডিপ্লমেটিক পরিস্থিতির পর অনেকে জেলেনস্কির সাথে ট্রাম্পের এমন আচরণের সমালোচনা করেন। রিপাবলিকান দলীয় বেশির ভাগ নেতা ট্রাম্পের পাশে দাঁড়ালেও মধ্যপন্থী রিপাবলিকান, নেব্রাস্কার কংগ্রেসম্যান, ডন বেকন মন্তব্য করেন, ‘এটি মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির জন্যে একটি খারাপ দিন।’ আলাস্কার সিনেটর লিসা মুরকোস্কি বলেন, ‘যেভাবে ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের মিত্রদের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন এবং পুতিনকে কাছে টেনে নিচ্ছেন, তা দেখে আমার খুব জঘন্য লাগছে। অন্যদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকিকে ‘সাবেক প্রেমিকার’ সাথে তুলনা করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে বিগত ডেমোক্র্যাক্ট দলীয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারের কাছ থেকে জেলেন্সকি ইংরেজিতে যাকে বলে, ‘টোটাল সাপোর্ট‘ তাই পেয়েছিলেন। আমেরিকা ও ইউরোপের আশ্বাসের উপর ভর করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং দেশের কতা পরিমান মাটি ছাড় না দিয়ে যুদ্ধ–জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেখিয়েছিলেন দেশবাসীকে। সেই স্বপ্ন, সেই আশা বুঝি শেষ হবার খুব বেশি বাকি নেই। আমেরিকার সম্পূর্ণ সমর্থন ছাড়া, কেবল ইউরোপ কিংবা ন্যাটোর সমর্থন দিয়ে জেলেনস্কির পক্ষে যে এই যুদ্ধে জয়ী হবার কোন সম্ভাবনা নেই তা দিনের আলোর মত স্বচ্ছ। দেরিতে হলেও জেলেনস্কি তা এখন টের পাচ্ছেন।
বেচারা জেলেন্সকি। এখন সম্ভবত তাকে মার্কিন সহায়তা ছাড়াই যুদ্ধ করতে হবে, যা প্রায় অসম্ভব কিংবা সুবোধ বালকের মত মার্কিন–শর্ত মেনে নিয়ে যুদ্ধ থামাতে চুক্তি করতে হবে। কেননা ইউরোপ তাকে যতই সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দিক না কেন, আমেরিকার সহযোগিতা ছাড়া যে ইউক্রেন এই যুদ্ধ এতদিন চালিয়ে যেতে পারতো না এবং আগামীতেও পারবে না তা বলা বাহুল্য। আর এই কথাটাই প্রমাণিত হলো সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিষ্টানসনের বক্তব্যে। তিনি বলেন, তার দেশ ইউক্রেনকে নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত, যদি এতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকে। রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ সুইডেন, ফিনল্যান্ড নিজেরাই রুশ–আগ্রাসনের ভয়ে আছে। ন্যাটো না থাকলে তো তারা অসহায়। আর ন্যাটো চলছে আমেরিকার শক্তিতে। সে শক্তি আর্থিক ও সামরিক সব দিক থেকে।
তবে ট্রাম্পের কাছে নাজেহাল হবার পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি উষ্ণ অভ্যর্থনা পান লন্ডন পৌঁছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে তাকে স্বাগত জানান। ব্রিটিশ রাজা চার্লস (তৃতীয়)-র সাক্ষাৎ পান তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, কিয়েভ এবং মস্কোর মধ্যে যুদ্ধ–বিরতি হলে ইউক্রেনে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে সেনা মোতায়নে যোগ দেবে বলে বেশ কয়েকটি দেশ ইঙ্গিত দিয়েছে বলে জানান। ইউক্রেন যাতে পাঁচ হাজারের বেশি বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে পারে তার জন্যে তার দেশ ইউক্রেনকে ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ড দেবে বলে জানান। উল্লেখ করা যেতে পারে, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ বের করতে আলোচনার জন্যে প্রধান মন্ত্রী স্টারমারের উদ্যোগে গত রোববার লন্ডনে এক জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তাতে ১৮ ইউরোপীয় নেতা অংশ গ্রহণ করেন। সম্মেলন শেষে তারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। সম্মেলন শেষে যে বিষয়টি বেরিয়ে আসে তা হলো ইউরোপীয় নেতাদের প্রস্তাবিত একটি ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ গঠন। তবে এই জোটে কে কী ভূমিকা পালন করবে ও কী অবদান রাখবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। যাই হোক না কেন, যত জোট গঠন করা হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্র এই তথাকথিত জোটে অন্তর্ভুক্ত না হলে এই উদ্যোগ কতটুকু সফল হবে সে নিয়ে অনেকের সংশয় রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ন্যাটো যে শক্তিশালী নয় সে কথা মনে করিয়ে দেয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে আছি। ইউরোপকে অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ তবে তিনি বলেন, ‘শান্তিকে সমর্থন করতে ও সফল হতে হলে এই প্রচেষ্টায় অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সমর্থন থাকতে হবে।’ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে তার চমৎকার সম্পর্ক ধরে রাখতে চান। ট্রাম্পের পক্ষের ইউরোপীয় নেতারও কমতি নেই। ট্রাম্পের গুণমুগ্ধ হিসাবে পরিচিত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ওরবান ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, ‘ট্রাম্প সাহসের সঙ্গে শান্তির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।’
লক্ষ্যণীয় যে ওভাল অফিসে জেলেনস্কির অপদস্ত হবার পর এই নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এটি তার এক ধরণের বিজয়ও বলা যেতে পারে। ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মন্তব্য করেন, ‘এটি ছিল কিয়েভের চরম কূটনৈতিক ব্যর্থতা।’ পাশাপাশি ইউক্রেন নিয়ে লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে ইউক্রেনের জন্যে তহবিল বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সেখানে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে তা কোনভাবেই শান্তি পরিকল্পনার অংশ নয়, বরঞ্চ এটি যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্যে করা হয়েছে।’ তবে মুখপাত্র জানান যে–কোন গঠনমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হবে। একথা অনস্বীকার্য যে, ওভাল অফিসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার পর ইউক্রেন সংকট সমাধানের আশা অনেকটা চুপসে গিয়েছিল। অনেকে শংকা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যুদ্ধ বুঝি আর থামানো গেল না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কোন কিছু নেই। আর সে কারণে এর দিন কয়েক পর দেখা গেল ইউক্রেন–যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারো এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, উভয় পক্ষ আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উল্টো কথা শোনা গেল মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টসের কাছ থেকে। শান্তি চুক্তি কার্যকর করার জন্যে তিনি জেলেনস্কির পদত্যাগের কথার উল্লেখ করে বলেন, ‘ইউক্রেনে এমন একজন নেতার প্রয়োজন যিনি আমাদের সঙ্গে করতে পারবেন, রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ মোদ্দাকথা, এমন একজন নেতা চাই যিনি হবেন ট্রাম্পের আজ্ঞাবহ এবং তার ইচ্ছেয় কাজ করবেন, মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। জেলেনস্কি খুব ভালো করেই জানেন তার মার্কিন সমর্থন প্রয়োজন। তিনি জানেন ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ঝানু ব্যবসায়ী ও ডিলার। তিনি জানেন ট্রাম্প এখন ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির উল্টোপথে হেঁটে পুতিনের দিকে ঝুঁকছেন। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে খনিজ সম্পদ চুক্তি করে তিনি ট্রাম্পকে হাতে রাখতে চাইছেন। তাতে হয়তো শান্তি চুক্তিতে তিনি রাশিয়ার সাথে কিছুটা দেন–দরবার করতে পারবেন। ইউক্রেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা নিউ ইয়র্ক টাইমসসে লিখেছেন, ‘পুতিন হয়তো ট্রাম্পের দেয়া সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণের জন্যে একটা যুদ্ধ বিরতি মেনে নিতে পারেন, কিন্তু ইউক্রেন ধ্বংস করে দেবার কৌশলগত লক্ষ্য থেকে তিনি কখনোই সরে আসবেন না। নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া চুক্তি হলে, সেই চুক্তি ভেঙে যাবে এবং যুদ্ধ আবারও শুরু হবে।’ তিনি আরো মন্তব্য করেন, ‘মস্কো বাস্তবে কখনো বদলায় না, কিন্তু ইউরোপ এখনো বদলাতে পারে।’
লেখক
সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কলামিস্ট