৭০০ পাখি ধরে জবাই করে হত্যা

বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিক্রি করতো ভিন্ন নামে, গ্রেপ্তার ৩

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা | বৃহস্পতিবার , ৬ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারায় পাখির অভয়ারণ্য খ্যাত বাঁকখাইন, কৈখাইন, মালিয়ারা, কেয়াগড়সহ শিকলবাহা খালের দুই পাশের ঝোঁপঝাড় ও জঙ্গল থেকে ধরে জবাই করা প্রায় ৭শ পাখিসহ ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংঘবদ্ধ চক্রটি এসব পাখি ধরে জবাইয়ের পর বিভিন্ন হোটেলে ভিন্ন নামে বিক্রি করত বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে আনোয়ারা উপজেলা সদর এলাকায় জবাই করা পাখিসহ শিকারি চক্রের এ ৩ সদস্য পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তারা হলেন, পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের আজমউল্লা পাড়া এলাকার মো. ছৈয়দুল আলম (৬০), মহরী পাড়া এলাকার মো. ইদ্রিস (৬৫) ও শামসুল সওদাগরের পুরাতন বাড়ির মো. সোহেল (৩০)। এদের কাছ থেকে জবাই করা ১৩৫টি শালিক, ৪২২টি চড়ুই এবং ১৪০টি বাবুই পাখি উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসী নৃশংসভাবে পাখি হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাখি ধরা চক্রটি পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলার বাঁকখাইন, কেয়াগড়, কৈখাইন, মালিয়ারা এলাকার বিভিন্ন বিল ও শিকলবাহা খালের দুই পাশের পাখির অভয়ারণ্য, ঝোঁপঝাড় ও জলাশয় থেকে পাখি ধরে হত্যা করে বিক্রি করে আসছিল। গত মঙ্গলবার এই চক্রটি কৈখাইন নোয়া রাস্তায় ঘাট এলাকা থেকে সিএনজি যোগে জবাই করা পাখি নিয়ে আনোয়ারা উপজেলা দিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

পুলিশ জানায়, পাখি ধরা চক্রের সদস্যরা সকালে এবং বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়কে টার্গেট করে ফাঁদ পাতত। ময়না, শালিক, ঘুঘু, বাবুই, চড়ুইসহ সব ধরনের পাখিই থাকত শিকারের তালিকায়। কিন্তু সব পাখি খাবারের তালিকায় না থাকলেও পালক পরিষ্কার করে নগরীর বিভিন্ন হোটেলে ভিন্ন নামে বিক্রি করে দিত তারা। জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন এমন পাখি শিকারে জড়িত থাকাসহ নানা তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন। তিনি জানান, এ ব্যাপারে আনোয়ারা থানায় একটি মামলা হয়েছে। পাখিগুলোর বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, চট্টগ্রাম অথবা আনোয়ারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনোয়ারা সচেতন নাগরিক ফোরামের মুখপাত্র আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী কুসুম বলেন, পবিত্র রমজান মাসে বিক্রির উদ্দেশ্যে নির্বিচারে পাখি নিধন বা জবাই করে হত্যার ঘটনা অতি নিন্দনীয়। এই ঘটনায় জড়িতদের আমরা কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনার বিচার কাজের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো ‘সম্পর্ক নাই’: খসরু
পরবর্তী নিবন্ধবসতঘরে খোলা সয়াবিন তেল প্যাকেটজাত করার কারখানা