বাংলাদেশ বিজ্ঞাপন শিল্পের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও কর সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি ও জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে আয়োজিত ‘দ্য ভ্যাট অ্যান্ড ট্যাক্স প্লেবুক : ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ফর এজেন্সিজ’ কর্মশালা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বনানী ক্লাবের মেহফিল হলে সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এএএবি) আয়োজিত এই কর্মশালায় দেশের ৫০টির অধিক স্বনামধন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থার ফিন্যান্স ও একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের নির্বাহীগণ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অংশ নেন। এএএবি–এর কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহসানুল আপনের বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মশালার সূচনা হয়।
তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এএএবি বিজ্ঞাপন খাতের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসার নির্ধারিত গ্রাহকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে, ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিক্রয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন খাতের বার্ষিক বাজারমূল্য আনুমানিক ১২,০২৮ কোটি টাকাতে পৌঁছাবে এবং এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৭৫ লক্ষাধিক মানুষ যুক্ত রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৮২% তরুণ। তবে, জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও বিজ্ঞাপন খাতটি এখনও অনেকটা অসংগঠিত এবং একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সঠিক ও নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুপস্থিতি, অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভ্যাট ও কর নীতি এবং শিল্পখাতের স্বীকৃতির অভাব এর অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও আইনগত আধুনিকায়নের পথে এই মুহূর্তে বিজ্ঞাপন খাতের জন্য যেমন প্রয়োজনীয় সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একটি স্বচ্ছ নিয়মতান্ত্রিক ও টেকসই ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি করাও অপরিহার্য। একটি আধুনিক ও নিয়মতান্ত্রিক বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন–এ ইতিমধ্যে একটি সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এএএবি এজেন্সি ও সরকারের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করতে চায়, ন্যায্য নীতিমালা তৈরি করে বিজ্ঞাপনী খাতকে শক্তিশালী করে তুলতে চায়। ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভ্যাট ও ট্যাক্সের আওতায় নতুন নতুন এজেন্সিকে যুক্ত করে দেশের সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে চায়। কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, বিজ্ঞাপন শিল্পের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও কর সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে এএএবি–এর পক্ষ থেকে শীঘ্রই একটি প্রস্তাবনা সরকারের কাছে উত্থাপন করা হবে। এই প্রস্তাবনা গৃহীত হলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন শিল্পের প্রতিবন্ধকতাগুলো দ্রুত নিরসন হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন এএএবি–এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ মারুফ ও কোষাধ্যক্ষ সারাহ আলী।
কর্মশালায় বিজ্ঞাপন শিল্পের জন্য কর সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা নিয়ে কথা বলেন, অচিন্ত কুমার দাস, গ্রুপ সিনিয়র ম্যানেজার, ট্যাঙ ও ভ্যাট, এশিয়াটিক ৩৬০। তিনি কর ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক যেমন এআইটি, টিডিএস, বিদেশে কর পরিশোধ বাধ্যতামূলক কর রিটার্ন এবং সাম্প্রতিক সংশোধনী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এরপর ভ্যাট রিটার্ন ও কমপ্লায়েন্স নিয়ে কথা বলেন ফয়সাল ইসলাম এসিএ, সিআইপিএফএ, এলএলবি, হেড অব ফাইন্যান্স, ডট বার্থ লিমিটেড। তিনি মাসিক ভ্যাট রিটার্ন, ভ্যাট রিবেট, উৎসে কর কর্তন এবং কমন ভুল ও তার প্রতিকারের উপায়গুলো উপস্থাপন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।