বাংলাদেশ রেলওয়ের দু’দিনব্যাপী ৪৪তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা গতকাল বৃহস্পতিবার ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ড মাঠে সম্পন্ন হয়েছে। গত বুধবার এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়েছিল। এবারের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সদর দপ্তর/পশ্চিম দল(রাজশাহী)। তারা ৫টি স্বর্ণ,৩টি রৌপ্য এবং ৩টি তাম্র পদক জয় করে শীর্ষ স্থান পায়। লালমনির হাট দল ৫টি স্বর্ণ,২টি রৌপ্য এবং ১টি তাম্র পদক পেয়ে রানার্স আপ হওয়ার গৌরব পায়। তৃতীয় স্থান অধিকার করে পাকশী দল। তারা ৪টি স্বর্ণ,৫টি রৌপ্য এবং ৩টি তাম্র পদক অর্জন করে। গতকাল সমাপনী দিনে বেশ কয়েকটি ইভেন্টের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখ্য ছিল প্রতিযোগিতার আকর্ষনীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার দৌড়। এতে প্রথম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ রেলওয়ের দ্রুততম মানবের খেতাব পান পাহাড়তলী দলের ওমর ফারুক। তিনি ১১.৮৪ সেকেন্ডে দৌড় সম্পন্ন করেন। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন সদর দপ্তর/পশ্চিম দলের মো. বকুল হোসেন। তিনি সময় নেন ১১.৯১ সেকেন্ড। এছাড়া তৃতীয় স্থান পান সৈয়দপুর দলের মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি ১২.৪৪ সেকেন্ডে দৌড় সম্পন্ন করেন। অন্য ইভেন্টের মধ্যে ৫০০০ মিটার দৌড়ে ১ম হয়েছেন চট্টগ্রাম দলের শেখ নাহিদ উদ্দিন, দ্বিতীয় স্থান পান লালমনির হাট দলের মো. আয়েনউদ্দিন। তৃতীয় স্থান লাভ করেন সৈয়দপুর দলের পবিত্র চন্দ্র ভৌমিক। চাকতি নিক্ষেপ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন লালমনির হাট দলের মনোয়ারুল ইসলাম,দ্বিতীয় হন সৈয়দপুর দলের মো. মোখলেছুর রহমান, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন পাকশী দলের মো. আবদুল্লা আল মামুন। মহিলাদের বর্শা নিক্ষেপে প্রথম স্থান অধিকার করেন সৈয়দপুর দলের পপি রানী রায়, দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন একই দলের মোসা. শাপলা আকতার। তৃতীয় স্থান পান পাহাড়তলী দলের মেহেরুন নেছা। প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। তিনি ঐতিহ্যবাহী পলোগ্রাউন্ড মাঠের কথা উল্লেখ করে বলেন ৮৫ সালে এসএসসির পর আমি চট্টগ্রাম এসেছিলাম। তখন এই মাঠটির পাশ দিয়েই গিয়েছিলাম। অবাক হয়ে তাকিয়েছিলাম মাঠটির দিকে। আমাকে বলা হয়েছিল এই মাঠটিতে একসময় ব্রিটিশরা ঘোড়ায় চড়ে পলো খেলতো। তাই এ মাঠের নাম পলোগ্রাউন্ড। আমি উত্তরবঙ্গের মানুষ। সেবারই এই চট্টগ্রামে আমার প্রথম পাহাড় এবং সমুদ্র দেখা হয়। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন সেই ঐতিহ্যবাহী মাঠটিতেই আমি আজ অতিথি হয়ে এসেছি। তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ দেন। তবে তিনি উপস্থিত রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান কর্মক্ষেত্রেও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে এবং আমাদের আরো অনেক কিছু অর্জন করতে হবে। দ্রুত সেবা দানে রেলওয়েকে আরো এগিয়ে নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন তিনি সবাইকে। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ে,চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সবুক্তগীন এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মো. আফজাল হোসেন। পরে প্রধান অতিথি রেলওয়ে সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। দু’দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই অঞ্চলের ৮টি দল অংশগ্রহণ করে। দলগুলো হলো সৈয়দপুর, পাকশী, লালমনির হাট, চট্টগ্রাম, সদর দপ্তর/ পশ্চিম, পাহাড়তলী, সদর দপ্তর/ পূর্ব এবং ঢাকা দল। মোট ১২০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন বিভিন্ন ইভেন্টে। প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বের করা হয় রেনেসাঁ নামে একটি সুদৃশ্য স্মরণিকা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং তাদের পরিবার বর্গ উপস্থিত ছিলেন।